ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের গণরুমে র্যাগিংয়ের অভিযোগ
ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রথম নিউজ, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) লালন শাহ হলের গণরুমে র্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছেন এক নবীন শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি লালন শাহ হলের ৩৩০ নম্বর রুমে (গণরুম) থাকি। গত সোমবার রাত দুইটায় আমাকে ১৩৬ নম্বর গণরুমে ডাকেন চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আফিফ হাসান, তন্ময় বিশ্বাস ও তাঁদের সহযোগীরা। এ সময় তাঁরা আমার ওপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করেন এবং আমি যৌন হয়রানির শিকার হই। পরে হল থেকে বের হয়ে জিয়া মোড়ে আসি। পরে আমি হলে ঢোকার সময় হল গেটে আমাকে আফিফ ও তন্ময় মারধর করেন। একপর্যায়ে মারতে মারতে জিয়া মোড়ে নিয়ে আসেন। এ সময় আমার জামা ছিঁড়ে যায় ও চশমা ভেঙে যায়। অতঃপর বিচার করার জন্য ছাত্রলীগের রুমে নিয়ে গিয়ে সেখানেও আবার মারধর করেন।’
অভিযুক্ত তন্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে একটু মনোমালিন্য হয়েছিল। পরে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ ভাই বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছিলেন। তাঁকে কোনো মারধর করা হয়নি।’
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ বলেন, ‘সেদিন রাতে শুনলাম, হল গেটে কারা ধাক্কাধাক্কি করছে। পরে ওদের ডেকে মীমাংসা করে দিলাম। তখন তো তাঁরা সবাই সন্তুষ্টচিত্তে বের হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আজ শুনলাম, সে অভিযোগ করেছে। পরে বিকেলের দিকে ওই ছেলের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। শুনলাম, সে ব্যক্তি উদ্যোগে অভিযোগটি উইথড্র করে নিয়েছে।’ যৌন হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই রুমে সেদিন কী হয়েছিল, তা আমার জানা নেই। হল গেটে ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল, এতটুকুই জানি।’
লিখিত অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক শেলীনা নাসরিন বলেন, ‘অভিযোগটি আমরা হাতে পেয়েছি। তাঁর বিষয়টি আমলেও নেওয়া হয়েছে। আমরা কাল তাদের ডেকে কথা বলব।’
প্রসঙ্গত, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাচ্ছুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুনের বিরুদ্ধে। পরে ৪ মার্চ হাইকোর্টের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।






