জেনে নিন লিভারের সমস্যার ৫ সাধারণ লক্ষণ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: শরীর সুস্থ রাখতে লিভার বা যকৃতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেহের বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন, খাদ্য হজমে সহায়তা, প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সংরক্ষণ—এই সবকিছুই নির্ভর করে লিভারের উপর। কিন্তু নানা কারণেই এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটির কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। প্রথমদিকে এই পরিবর্তনের কিছু লক্ষণ শরীরে দেখা দিলেও অনেকেই তা উপেক্ষা করেন, ফলে পরবর্তীকালে সমস্যা ভয়াবহ আকার নিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লিভার ঠিকমতো কাজ করছে কিনা, তা বোঝার জন্য কিছু লক্ষণের দিকে নজর রাখা জরুরি। চলুন, জেনে নিই লিভারের সমস্যার ৫টি সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
ত্বক ও চোখে হলুদ ভাব (জন্ডিস)
লিভারের অসুস্থতার সবচেয়ে পরিচিত লক্ষণ হলো জন্ডিস। লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তে বিলিরুবিন নামক হলুদ রঞ্জকের পরিমাণ বেড়ে যায়।
ফলে ত্বক, চোখের সাদা অংশ ও নখ হলুদ হয়ে যায়। প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হতে পারে। এই উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পেটের ডান দিকে ব্যথা ও অস্বাভাবিক ফোলাভাব
লিভার আক্রান্ত হলে পেটের ডান দিকে, বিশেষ করে ওপরের অংশে চাপা ব্যথা বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।
অনেক সময় লিভারে পানি জমে (অ্যাসাইটিস), ফলে পেট ফুলে যায়। এই লক্ষণ সিরোসিস বা অন্য জটিল লিভার সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি ও দুর্বলতা
পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের পরেও যদি শরীর জুড়ে ক্লান্তি ও অবসাদ থাকে। তবে তা লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারে। লিভার শক্তি উৎপাদন ও পুষ্টি প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ ভালোভাবে করতে না পারলে এই সমস্যা দেখা দেয়।
বমি বমি ভাব ও ক্ষুধামান্দ্য
লিভারের কর্মক্ষমতা কমে গেলে হজমে সমস্যা দেখা দেয়। এতে খাবারে অরুচি, বমি বমি ভাব বা ওজন হ্রাসের মতো উপসর্গ দেখা যায়। বিশেষ করে চর্বিযুক্ত খাবার হজম করতে অসুবিধা হলে পেটে অস্বস্তি ও গ্যাসের সমস্যা বাড়ে।
ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা
যখন লিভার শরীরের বিষাক্ত উপাদান ঠিকভাবে বের করে দিতে পারে না, তখন তার প্রভাব পড়ে ত্বকে। চুলকানি, লালচে ভাব, ফুসকুড়ি কিংবা মাকড়সার জালের মতো রক্তনালীর বিস্তার (স্পাইডার অ্যানজিওমা) দেখা যেতে পারে। এই উপসর্গগুলিকে অবহেলা না করে, দ্রুত পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।
সতর্কতা
এই উপসর্গগুলির যেকোনও একটি দীর্ঘদিন থাকলে তা হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা শুরু করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লিভার আবার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ফিরে পেতে পারে। তাই দেরি না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। সুস্থ লিভার মানেই সুস্থ শরীর। তাই নিজের শরীরের বার্তা বুঝে সময় থাকতেই পদক্ষেপ নেওয়াটা জরুরি।