নারী উদ্যোক্তাকে মারধর, ফার্মের রাস্তায় প্রভাবশালীর বাঁশের বেড়া!

মামলার প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীকে স্বাক্ষ্য না দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। 

নারী উদ্যোক্তাকে মারধর, ফার্মের রাস্তায় প্রভাবশালীর বাঁশের বেড়া!

প্রথম নিউজ, কুষ্টিয়া: স্বাবলম্বী হওয়ার প্রত্যাশায় বহু কষ্টে দুই বোন উদ্যোগ নিয়ে  নিজ জমিতে গড়ে তোলেন মুরগী ফার্ম। কিন্তু সেই ফার্মে বদ নজর পড়েছে এলাকার প্রভাবশালীর। ওই প্রভাবশালী ফার্মে যাওয়ার রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়েছে ও ফার্মের পানির পাইপ কেঁটে দিয়েছে। এছাড়া ওই নারী উদ্যোগক্তাকে মারধরও করেছে। মারধরের বিষয়ে থানায় মামলা দায়ের করা  হয়েছে। মামলার প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীকে স্বাক্ষ্য না দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বড় আইলচারা গ্রামের পিতা মাহাতাব আলীর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস (২৫) ও সালমা সুলতানা (৩৭) দুইবোন বাড়ির পাশের একটি জমি কিনে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রত্যাশায় সেখানে মুরগী ফার্ম গড়ে তুলেছেন। সেই ফার্মে বদনজর দিয়েছে ওই এলাকার প্রভাবশালী শাহাদাতের ছেলে সায়েদ। এরপর থেকে ওই দুই নারী উদ্যোক্তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের মূল উদ্দেশ্য কোনভাবেই যেন ওই নারী উদ্যোগক্তারা স্বাবলম্বী হতে  না পারে।এজন্য ওই প্রভাবশালীরা তাঁদের নানা রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছে।
ফার্মে যাওয়ার রাস্তা বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে।কেঁটে দিয়েছে ফার্মে পানি সরবরাহের একমাত্র পাইপলাইনও। এছাড়া গত ৮ জুন ২০২৩ অনুমানিক সকাল ৮:০০ টার দিকে সদলবলে ওই নারী উদ্যোক্তাদের হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেন। এতে সালমা সুলতানা (৩৭) ও জান্নাতুল ফেরদৌস(২৫) আহত হয়।এবিষয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস(২৫) বাদী হয়ে গত ১২ জুন ২০২৩ কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ২১, তারিখ :১২ জুন ২০২৩।য়ধারা ১৪৩, ৪৪৭, ৩২৩, ৩২৪, ৩০৭, ৪২৭, ৫০৬(২) ও ১১৪।
এতে অভিযুক্ত আসামীরা হলেন, শাহাদাতের ছেলে সায়েদ(৪০), মৃত অহেদের ছেলে বশির উদ্দিন (৫২) ও ৪) মঙ্গল জোয়ার্দ্দার (৫৫), মঙ্গল জোয়ার্দ্দারের ছেলে আরিফ (৩২) ঘুঘুর আলীর ছেলে সোহাগ(২৮) ও সোহেল (৩২) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জন। এছাড়াও আসামী পক্ষের হয়ে পরোক্ষভাবে মামলার স্বাক্ষীকে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে ওই গং এর আরেক সদস্য একই এলাকার মৃত নিয়ামত আলীর ছেলে খালেক। তিনি স্বাক্ষীকে বলেন,"স্বাক্ষী দিলে বিপদ আছে! স্বাক্ষী যেন না দেওয়া হয়।"
এবিষয়ে হুমকিদাতা খালেকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসদাচরণ করেন এবং বলেন,"ওই মিয়া আপনি কে? আপনাকে বলতে হবে কেন? কাকে হুমকি দেবো না দেবো সেটা আমার ব্যাপার।"
এবিষয়ে মামলার বাদী জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, "মামলা করেও আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার মামলার স্বাক্ষীকেও হুমকি দিচ্ছে। বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় আমাদের দেখার মতো কেউ নেই। আমাদের ফার্মের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে, পানির পাইপ কেটে দিয়েছে। আমরা এর প্রতিকার ও সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি মুঠোফোনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি।"
মামলার তদন্তকারী অফিসার কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই কামরুল জানান, "আমি হুমকি দেওয়ার বিষয়টি শুনেছি।"