পরমাণু শক্তি কমিশনে অযাচিত হস্তক্ষেপ করছে মন্ত্রণালয়

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক:বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের স্বায়ত্তশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়েছেন কমিশনের সর্বস্তরের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের দাবি, পরমাণু শক্তি কমিশনে স্বায়ত্তশাসনের চরম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিজ্ঞানীদের উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণে বাধা সৃষ্টি, বেতন বৈষম্য ও পদ অবনমন, নবীন বিজ্ঞানীদের অনুৎসাহিত করা, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পে কমিশনের অধিকার খর্ব, উপযোগিতা যাচাই না করেই iBAS++ সিস্টেম চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টি না হওয়ায় হচ্ছে না পদোন্নতি। এরই মধ্যে আটকে গেছে প্রায় ৬০০ বিজ্ঞানী ও ২৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের পরমাণু ভবনের ড. আনোয়ার হোসেন অডিটরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সর্বস্তরের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যৌথ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ। এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাপশক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. কামরুজ্জামান উজ্জ্বল ও সভাপতি ইসমাইল হোসেন মামুন; বাপশক অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সিরাজুল আরেফিন ও সাধারণ সম্পাদক এ টি এম গোলাম কিবরিয়া; বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. গোলাম রসুল।
লিখিত বক্তব্যে ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্যের সমন্বয়ে কমিশন গঠিত হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষ পদগুলো শূন্য থাকায় কমিশনের সার্বিক কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে। বর্তমানে চেয়ারম্যান পদে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ও একজন সদস্য চলতি দায়িত্বে রয়েছেন। পূর্ণ কমিশন না থাকা ও মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং কর্তৃত্ববাদী আচরণের কারণে কমিশনের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা বাপশক আইন ২০১৭ ও বাপশক চাকরি বিধিমালা ১৯৮৫তে প্রদত্ত সুবিধাদি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
তিনি বলেন, চাকরি বিধিমালায় এ প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীদের বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণকে উৎসাহিত করা হয়েছে। ফলে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা মেধাবী শিক্ষার্থীদের অন্যতম আকর্ষণ কমিশনে চাকরি। ২০১১ সাল পর্যন্ত কমিশনের বিজ্ঞানীদের উচ্চ শিক্ষা/প্রশিক্ষণের পূর্বানুমতি, মনোনয়ন এবং বিদেশ যাওয়ার সরকারি আদেশ (জিও) কমিশন থেকেই দেওয়া হতো। তবে ২০১১ সালে তৎকালীন সরকার কমিশনের জিও দেওয়ার ক্ষমতা রহিত করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত করে। তখন থেকে কমিশনের বিজ্ঞানীরা উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে বঞ্চিত হয়ে আসছে।