পায়ে হেঁটে ৪২ বছর ধরে পত্রিকা বিক্রি করেন ফখরুদ্দীন
সাইকেল কেনার সংগতি নেই, প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা পায়ে হেঁটেই এ উপজেলার অলিগলিতে খবরের কাগজ বিক্রি করেন তিনি

প্রথম নিউজ, নীলফামারী : নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৪২ বছর ধরে খবরের কাগজ বিক্রি করছেন ষাটোর্ধ্ব মো. ফখরুদ্দীন ফখরু। সাইকেল কেনার সংগতি নেই, প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা পায়ে হেঁটেই এ উপজেলার অলিগলিতে খবরের কাগজ বিক্রি করেন তিনি। পত্রিকার পাঠক মহল শহরের গার্ডপাড়া এলাকার ফখরুদ্দীনকে এক নামে চিনেন। ফখরুদ্দীন জানান, ১৯৮০ সালে তরুণ বয়স থেকে পত্রিকা বিলির কাজ শুরু করেন। পত্রিকা বিলির এই কাজে জীবনের ৪২ বছর পার করেছেন তিনি। ১৯৮০ সালে পত্রিকার সংখ্যা ছিল কম। হকারও ছিল হাতেগোনা কয়েকজন। প্রতিদিন ভোরে পত্রিকা সংগ্রহ করে রোদবৃষ্টি সব বৈরী আবহাওয়া সামলে পত্রিকা পৌঁছে দিয়েছেন পাঠকের দ্বারে।
পারিবারিক অবস্থা সম্পর্কে ফখরুদ্দীন বলেন, তার স্ত্রী গৃহিণী। পত্রিকা বিক্রি করেই তিন ছেলেমেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। ইতোমধ্যে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এক ছেলে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। পায়ে হেঁটে পত্রিকা বিলি নিয়ে ফখরুদ্দীন বলেন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস, স্কুল-কলেজ, দোকানপাটসহ নানা স্থানে পত্রিকা বিলি করেন তিনি। প্রতিদিন ৩০০ পত্রিকা বিক্রি হয় তার। যদিও ইন্টারনেটের অগ্রগতিতে এখন ছাপা সংবাদপত্রের বিক্রি অনেক কমেছে। এর পরও ফখরুদ্দীন তার জীবনের বাকি সময়টুকু এ পেশাতেই কাটিয়ে দিতে চান।
বয়সের ভারে শরীর আর আগের মতো চলে না পরিচিত ফখরুদ্দীনের। তিনি বলেন, ‘বয়স বাড়ার কারণে আগের মতো আর শক্তি নাই। তাই পায়ে হেঁটে কাগজ বিক্রি কঠিন হয়ে পড়ছে। তার পরও কাগজ বিক্রি করি পেটের দায়ে।’ ফখরুদ্দীনের বিষয়ে কথা হয় সৈয়দপুরের কয়েকজন পত্রিকা এজেন্টের সঙ্গে। তারা প্রত্যেকেই বলেন, ফখরুদ্দীন অত্যন্ত পরিশ্রমী। সুনামের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় ও স্থানীয় খবরের কাগজ বিক্রি করে আসছেন তিনি। প্রতিদিন ভোরে নতুন দিনের খবরের কাগজ পাঠকের হাতে তুলে দিতে ছুটে যান।
তার ভালো আচরণ ও সময়মতো পত্রিকা সরবরাহের কারণে গ্রাহকরা তার কাছ থেকে খবরের কাগজ কেনা পছন্দ করেন। এ বয়সেও তিনি কাজ করছেন ক্লান্তিহীন।’
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews