ফের বেড়েছে মুরগির দাম, ভরা মৌসুমেও চড়া সবজি

সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ফের ২০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ফের বেড়েছে মুরগির দাম, ভরা মৌসুমেও চড়া সবজি

প্রথম নিউজ, অনলাইন: সবজির ভরা মৌসুম এখন। বাজারে মিলছে হরেক রকমের সবজি। তবে এখনো দাম চড়া। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। থরে থরে টমেটো সাজানো থাকলেও কেজিতে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এ ছাড়া ফুলকপি ও বাঁধাকপির দর ৪০ থেকে ৫০ টাকা। অন্য বছর এ সময়ে যা ২০ থেকে ৩০ টাকায় পাওয়া যায়। মটরশুঁটির কেজি ১৫০-১৮০ টাকা। সঙ্গে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ফের ২০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।  বিক্রেতারা জানান, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯৫-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা সাত দিন আগেও ১৮৫-১৯০ টাকা ছিল। কারণ শীতে খামারে মুরগির রোগব্যাধি বেড়েছে। অনেক মুরগি মারা গেছে। যে কারণে সরবরাহ কমেছে। এ ছাড়া খামার পর্যায় থেকে দাম বাড়ানোর কারণে খুচরা বাজারে দাম বাড়ছে।

কাওরান বাজারে আসা খলিল বলেন, বাজারে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম কমেছে। তবে যে হারে বেড়েছিল সে হারে এখনো দাম কমেনি। ভরা মৌসুমে প্রতি কেজি পিয়াজ এখনো ৯০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। আদা ও রসুন কিনতে হচ্ছে ২০০ টাকার উপরে। নতুন আলুতে বাজার ভরপুর। তারপরও ৫৫ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। 

শীত মৌসুমে বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়লেও ক্রেতার বাড়তি দরেই কিনতে হচ্ছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০। এ ছাড়া প্রতি কেজি বেগুন কিনতে ক্রেতার গুনতে হচ্ছে ৭০-৮০। সঙ্গে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা এবং ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি কাঁচা টমেটো ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০-৮০ টাকা, পটোল ৭০-৮০ টাকা, বরবটি ১০০-১২০ টাকা ও পেঁপে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানভেদে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০-৯০ টাকা, ঝিঙা ৭০-৮০, কচুর লতি ৬০-৮০ টাকা, গাজর ৬০-৭০ টাকা, শসা ৬০-৭০ টাকা ও কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।  

বেসরকারি চাকরিজীবী খালেদ বলেন, শীতের মৌসুমে আগে কখনোই এত দামে সবজি কিনিনি। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতকালে সবজির দাম কম থাকবে এটা সবার জানা। কিন্তু বাজারে এখনো সবকিছুই প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। মোমিন নামের একজন ক্রেতা বলেন, শীতে বাজারে সব ধরনের সবজিতে ভরপুর। বিক্রেতারা ঝুড়ি বোঝাই করে সাজিয়ে রেখেছে। কিন্তু হাত দেয়া যাচ্ছে না। দাম অনেক বেশি। এখন একটি ফুলকপি ৫০ টাকা দিয়ে কিনে খেতে হচ্ছে। যেখানে মৌসুমের শুরুতে এ সবজির দাম ২০-২৫ টাকা থাকে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার ম-ল বলেন, পণ্যের দাম ভোক্তা সহনীয় করতে প্রতিদিন বাজারে তদারকি করা হচ্ছে। এতে কিছু পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। বাকি যেসব পণ্যের দাম বেশি আশা করা হচ্ছে সেগুলোর দামও কমে আসবে।

ব্রয়লার মুরগির দরও কিছুটা বাড়তি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। সোনালি জাতের মুরগি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা। ডজনে ৫ টাকা বেড়ে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। গরুর মাংস মিলছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। মাছের বাজারে বড় লাফ দেখা গেছে ইলিশে। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কিনতে গুনতে হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা। মাসখানেক আগে যা ছিল ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। অন্যান্য মাছের দরে খুব বেশি হেরফের নেই।

এদিকে রমজান আসতে এখনো দেরি দুই মাসের বেশি। তবে এরইমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে ছোলার দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডাল জাতীয় খাদ্য পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। একইসঙ্গে ছোলার ডাল, মুগ ডাল, অ্যাংকরসহ প্রায় সব ধরনের ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ছোলার কেজি ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, যা কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মুগ ডালের কেজি দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। একইসঙ্গে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে।