বিএনপি নয় আওয়ামী লীগই আগুন সন্ত্রাসের হোতা : রিজভী

আজ শুক্রবার নযাপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। 

বিএনপি নয়  আওয়ামী লীগই আগুন সন্ত্রাসের হোতা : রিজভী

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিএনপি নয়  আওয়ামী লীগই আগুন সন্ত্রাসের হোতা  বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিযর যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। 

আজ শুক্রবার নযাপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত রোববার সকালে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেছেন, “বিএনপি ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাস করে পেট্রোল বোমা দিয়ে অথবা অগ্নিসংযোগ করে সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে আন্দোলনের নামে। এই সাধারণ মানুষের গায়ে কেউ হাত দিলে তাদের রেহাই নাই, তাদের রক্ষা নাই।” কিন্ত দেশবাসী জানেন আগুন সন্ত্রাসের হোতা কারা ? জনগণের দল বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। বহু প্রমাণ রয়েছে-আগুন সন্ত্রাস করেছে আওয়ামী লীগের লোক, আওয়ামী লীগের এমপি ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা। আগুন সন্ত্রাসের হোতা আওয়ামী লীগই। বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সরকার নিজেদের লোক ও গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে বাসে আগুন লাগিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরে বিএনপি’র ওপর দোষ চাপিয়েছে। এসব ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। বর্তমানে আবার আগ বাড়িয়ে শেখ হাসিনা অগ্নি সন্ত্রাসের কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রহস্যজনক। বিরোধী দলের আন্দোলন করার সময় আওয়ামী লীগ যে কাজটি করবে সেটাই তারা এখন বলছে। এই কাজ আওয়ামী লীগ বহুবার করেছে। এখন আবার করবে তা আগেই বলে দিচ্ছে। দেশবাসীর মনে থাকার কথা ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সময় আন্দোলন নস্যাৎ করতে ও বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য একদিকে প্রশাসন যন্ত্র অন্যদিকে হাইপার প্রপাগান্ডা চালানো হয় নিখুঁতভাবে। সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র্রকে কব্জা করে যে প্রপাগান্ডা মেশিন বানিয়েছে তার দ্বারাই তারা অসত্য ও মনগড়া কথা বলে যাচ্ছে। ওরা যে নির্দয় নিপীড়ক তার প্রমাণ-বিএনপির ৩৭ লক্ষ নেতাকর্মীর নামে ১ লক্ষ ৭ হাজার বানোয়ারট মামলা দিয়ে তাদের ঘরছাড়া করা হয়। যারা একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এহেন নির্মমতা করতে পারে তাদের দ্বারাই বাসে আগুন, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে আসামী করা যে সহজ সেটি বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও জানে। ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে নিজেদের সৃষ্ট পুড়ে যাওয়া মানুষের খবর প্রচার করে। আহতদের প্রতি সহানুভুতির চেয়েও  বার্ণ ইউনিটকে শ্যুটিং স্পটে পরিণত করাই যেন তাদের মূখ্য উদ্দেশ্য। কারণ আন্দোলনকারীদের ওপর দায় চাপাতেই এই বোমা সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটিয়েছে আওয়ামী সরকার। আর এক্ষেত্রে দলদাস মিডিয়া দিয়ে বানোয়াট সব খবর প্রচার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালে বাস-মিনিবাসে বোমাবাজি কিম্বা আগুন লাগানোর ব্যাপারে অনেক পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য ইউটিউবে পাওয়া যাবে। শেখ হাসিনার উপদেষ্টা মরহুম এইচ টি ইমাম কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ইউনিক বাসে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মারার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছিলেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা সম্ভব নয়। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর বলেছিলেন,  'শেখ হাসিনা বলেন “খালেদা জিয়া মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। মূলত: হাসিনাই তাঁর লোক দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে।” আগুন সন্ত্রাসের সমস্ত ঘটনায় যে সরকারের লোকেরাই জড়িত সেটির অতিতে অনেক নজীর রয়েছে, তাদের লোকেরা সেটি স্বীকার করেছেন। বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপে চালকসহ ১১ যাত্রী নিহতের ঘটনায় বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথ জড়িত। সংবাদ সম্মেলন করে নিজ দলের নেতার এই আগুন সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরেন বরিশাল জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মইদুল ইসলাম। তাঁর নেতাদের এই কথার কি জবাব দেবেন শেখ হাসিনা ?
বরিশালে জেলা পরিষদের কার্যলয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “২০১৪ সালে ২ ডিসেম্বর শাহবাগের বিহঙ্গ পরিবহনের বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপে চালকসহ ১১ যাত্রী নিহতের ঘটনার সাথে পঙ্কজ নাথ জড়িত। পঙ্কজ নাথের নির্দেশেই ওই পরিবহনের বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এরপর তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হয়ে রাম রাজত্ব কায়েম করছে গোটা হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায়। চৌদ্দগ্রামে এরকম একটি ঘটনায় বিএনপি নেতৃবৃন্দের নাম জড়িয়ে যে মামলাগুলো দেয়া হয়েছিল, পরে সব কিছুর মূলে দেখা যায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের লোকেরাই জড়িত। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের গাড়ীতে আগুন ও মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘটনায় যুবলীগ নেতাকর্মীরা আটক হয়েছিলেন। এসব মানুষ ভুলে যায়নি। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতারা কিভাবে গাড়ী পুড়িয়েছে সেটি তারা নিজেরাই ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে স্বীকার করেছে যা ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে পেট্রোল বোমাসহ ধরা পড়েছিল যুবলীগের নেতারা। সেইসময় গাজীপুরের একটি ঘটনায় প্রথম আলোর একটি হেডলাইন ছিল থানায় গাড়ী অক্ষত, গাড়ী পোড়ানোয় আসামী বিএনপি নেতারা। আর গত ২০১৮ সালে বছর জুড়ে গায়েবী মামলার কথা মানুষ ভুলে যায়নি। তখন কবরে শায়িত লাশের নামে, হজ¦ব্রত পালনকালে সেই ব্যক্তির নামে, হাসপাতালে শায়িত পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তির নামে, প্রবাসীর নামে গায়েবী মামলা দেয়ার ঘটনা জনগণ ভোলেনি। রাষ্ট্রযন্ত্রকে কব্জায় নিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে সরকার টিকে আছে। আইন-আদালত, প্রশাসন, পুলিশ সবকিছুই শেখ হাসিনার হুকুমের দাসে পরিণত হয়েছে। উড়ো অবান্তর মিথ্যা প্রচারে পারঙ্গম শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন,  শেখ হাসিনার মুখে আবারো আগুন সন্ত্রাসের কথায় জনগণ আতংকিত। ‘হঠাৎ শেখ হাসিনার একথা বলার উদ্দেশ্য টার্গেট আন্দোলন।’ আবারও আগুন সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করার একটা মাস্টারপ্ল্যান আঁকছে শেখ হাসিনা। তাদের একমাত্র পথই হচ্ছে সহিংসতা ও সন্ত্রাস। কারণ এছাড়া ক্ষমতায় টিকে থাকার তাদের অন্য কোন অবলম্বন নেই। বিএনপি কোনো সন্ত্রাসী দল নয়। লগি-বৈঠা, খুন-গুম, হত্যা, পঙ্গু করে দেওয়ার রেকর্ড এ দলের নেই। এটা আছে জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকা আওয়ামী লীগের। অগ্নিসন্ত্রাস শব্দটিকে আবারো নতুন করে ব্যবহারের মাধ্যমে বিএনপির ওপর চাপ প্রয়োগ করার কৌশল নেয়া হচ্ছে। সুতরাং শেখ হাসিনার সন্ত্রাসী সকল অপচেষ্টা ব্যর্থ করে এবার জনগণ তাঁর পতন ঘটাতে বদ্ধপরিকর। মানুষের জীবন নিয়ে অপরাজনীতি বিএনপি করে না। এই আওয়ামী লীগ অতীতে আন্দোলনের নামে যাত্রীবাহী বাসে গান পাউডার দিয়ে আগুন লাগিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ২০০৪ সালের ৪ জুন শাহবাগে বাসে আগুন দিয়ে ১১ যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে মামলা হয় আওয়ামী লীগের দু’জন কেন্দ্রীয় নেতা। তদন্তে তারা দোষী সাব্যস্ত হলেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নানক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজমসহ ১৮ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। আদেশটি দেন ঢাকার মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরী। আজও বিচার পেল না গান পাউডারে বাস পোড়ায় নিহতরা। এই আওয়ামী লীগ ১৯৯১ থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত ১৭৩ দিন এবং ২০০১ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ১৩০ দিন হরতাল-অবরোধের নামে সন্ত্রাস নৈরাজ্য নাশকতা করেছে। লগি-বৈঠার তা-বে মানুষ হত্যা করে লাশের উপর নৃত্য করেছে। অতীতের ধারাবাহিকতায় নিরপরাধ মানুষকে নৃশংস পন্থায় হত্যাকা- চালানো হচ্ছে। এর দায় চাপিয়ে আন্দোলনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও বিএনপিকে দমন করার অপরাজনীতি ব্যর্থ হবে। বাংলাদেশের মানুষ এত বোকা নেই। ২০১৩-২০১৫ পর্যন্ত গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য আওয়ামী লীগ ও তাদের পোষ্যরা যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা, ট্রেনে আগুন, রেলপথে নাশকতা, উপাসনালয়ে হামলাসহ বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাস চালিয়ে তিন বছরে ১৭২ জনের প্রাণহানি ঘটায়। একই সময়কালে আহত হয় তিন হাজার ৮৬ জন। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে তিন হাজার ২৫২টির বেশি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য রয়েছে। ট্রেনে হামলা হয়েছিল ২৯ বার। সেই সময় পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত কয়েকটি ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই।

তিনি আরো বলেন, নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জের ভুলতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা লোকমান হোসেনের একটি ঝুটের গোডাউনে বোমা বানানোর সময় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতা রহমত উল্লাহসহ চারজন নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতাল ও স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিস্ফোরণের ঘটনার পর পরই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতারা ঘটনাস্থলে এসে বিস্ফোরণের আলামত সরিয়ে ফেলেন। (যুগান্তর ৫ ফেব্রুয়ারী)। ৪ ফেব্রুয়ারী রাত ১১ টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ দীঘি ইউনিয়নের কেসকি মোড় এলাকা থেকে পেট্রোল বোমাসহ মানিক ও বাবুল নামে যুবলীগের দুই নেতাকে আটক করে পুলিশ, কিন্তু পরে ছেড়ে দেয়। (শীর্ষ নিউজ ৪ ফেব্রুয়ারী) ৪ ফেব্রুয়ারী বুধবার দুপুর ২টার দিকে কুষ্টিয়ার মিরপুরে পেট্রল বোমাসহ ছাত্রলীগের এক নেতাকে পুলিশ আটক করে। পরে অজ্ঞাত কারণে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। (আমার দেশ ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৪) ৩ ফেব্রুয়ারী রাতে র‌্যাবের অভিযানে চট্টগ্রামের টাইগার পাস রেলওয়ে কলোনী থেকে ৯টি পেট্রোল বোমা, ২টি ককটেল, ৭টি কিরিচ, ২টি রামদা, ৯টি লোহার পাইপসহ ছয় ব্যক্তি আটক হয়। ঘটনার মূল হোতা মুন্না স্বীকার করে, সে নিহত যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবির মুরাদের ছোট ভাই এবং সে নিজেও আ’লীগ করে। (ইত্তেফাক, ৪ ফেব্রুয়ারী)
২৫ জানুয়ারী ফেনী শহরের টেলিফোন ভবন থেকে ৭টি পেট্রোল বোমাসহ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিমের ভাতিজা আজিম উদ্দিনকে আটক করে পুলিশ। (দিনকাল ২৫ জানুয়ারী ২০১৫) ১০ জানুয়ারী বেলা সোয়া ২ টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে ৩টি হাতবোমা বিস্ফোরণ হয়। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে হাতে নাতে গ্রেফতার হয় সাদিক নামে এক আ’লীগ কর্মী, যদিও পরে পুলিশ ছেড়ে দেয়। (যুগান্তর, ১১ জানুয়ারী ২০১৫) ১ জানুয়ারী রাত পৌনে ৮টার দিকে মাগুরা শহরের পারনান্দুয়ালি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে পেট্রল দিয়ে বাসে আগুন দেয়ার সময় ৩ ছাত্রলীগ কর্মী আটক হয়, যার মধ্যে ছিল জেলা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদ মোল্লা, ছাত্রলীগ কর্মী লিমন ও রানা। এদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় পেট্রোল ভর্তি দু’টি বোতল ও দিয়াশলাই। (বাংলাদেশ প্রতিদিন ২ জানুয়ারী ২০১৫)।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, লক্ষ¥ীপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতা কামরুল হোসেনের নেতৃত্বে গত ১ জানুয়ারি রাতে লক্ষ¥ীপুর মহিলা কলেজের সামনে যাত্রীবাহী সিএনজিতে পেট্রোল বোমা হামলা চালানো হয়, যাতে মারা যায় ২জন। ওই পেট্রোল বোমা হামলায় স্থানীয় দর্জি দোকান কর্মচারী ও যুবলীগ কর্মী পিচ্চি রুবেল, শামীম, মাসুদ ও জেলা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মুরাদ হোসেন জয়সহ ১০ থেকে ১২ জন অংশগ্রহণ করে। (শীর্ষ নিউজ ৫ ফেব্রুয়ারী)। ৮ ফেব্রুয়ারী চট্টগ্রাম মহানগরীর আগ্রাবাদ সিজিএস কলোনী এলাকার যুবলীগ কার্যালয় থেকে ১০টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। (শীর্ষ নিউজ, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৪) ১০ ফেব্রুয়ারী দুপুর ৩ টায় বগুড়ায় ককটেল বানানোর সময় বিস্ফোরণে সোহাগ (২২) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীর ডান হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। আহত সোহাগ বগুড়া সদর উপজেলার গোকুল ইউনিয়নের বড়ধাওয়া গ্রামের সফিকুল ইসলাম সফিকের ছেলে এবং স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি গণি’র ভাতিজা। (শীর্ষ নিউজ)। ২০১৫ সালের কয়েকটি আলোচিত আগুন সন্ত্রাসের সাথে পুলিশের সংশ্লিষ্টতার খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । ১৫ জানুয়ারী ২০১৫ রাতে বিজিবি-র পাহারায় ঢাকা আসার পথে রংপুরের মিঠাপুকুরে খলিল পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে বোমা হামলায় ৫ জন নিহত এবং ২৩ জন আহত। ২৩ জানুয়ারী গ্লোরি পরিবহনের একটি বাস ঢাকা থেকে নরসিংদী যাওয়ার পথে রাজধানীর যাত্রাবাড়ির কাঠের পুলের কাছে পেট্রোল বোমায় আক্রান্ত হয়ে ৩০ জন অগ্নিদগ্ধ। আহত একজনের বরাত দিয়ে দৈনিক কালেরকন্ঠ প্রকাশ করে, ঘটনার সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশের একটি গাড়ি, যা পরে ব্যবহার হয় আহতদের হাসপাতালে নিতে। এভাবে বিরোধী দলের আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করতে সরকার দলীয় সন্ত্রাসী ও প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে অসংখ্য অমানবিক ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থেকে উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চেয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি অগ্নি সন্ত্রাস গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে নির্মমভাবে ভেঙ্গে দেয়ার চক্রান্ত। যা প্রমাণসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উল্লিখিত আছে। চোখে ধুলো দিয়ে মিথ্যাচার করে লাভ নেই। শেখ হাসিনা নিজেও জানেন যে, তিনি সমস্ত অশান্তির মূল কারণ। বিবেকের দায় থেকে তিনি একবার উচ্চারণ করেছিলেন পদত্যাগের কথা। শেখ হাসিনাকে বলি-সন্ত্রাস ও মৃত্যুর এই মিছিল বন্ধ করুন। আপনার সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে মাঠে নামা এখন নাগরিক কতব্য। গণসমাবেশগুলি আন্দোলনের নবতরঙ্গের প্রথম ছবি।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন,  আগামীকাল ফরিদপুরের বিভাগীয় গণসমাবেশ। ফরিদপুরের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় নানাভাবে বাধা দেয়ার অপচেষ্টা চলছে। গভীররাতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় পুলিশ গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ইতোমধ্যেই ফরিদপুর শহরে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে জনগণ ও নেতাকর্মী আসতে শুরু করেছে। আগামীকাল ফরিদপুরের গণসমাবেশটি হবে ঐতিহাসিক। গতকাল সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মশিউর হুদা তুহিন, রবিউল আউয়াল,  কষকদল নেতা আমির হোসেন বাদশা, মিজানুর রহমান মিনু শাহিন রেজা, ছাত্রদল নেতা  পলাশসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী অতর্কিতে হামলা চালিয়ে তাদেরকে আহত করেছে। আহতদের মধ্যে আশাশুনি উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক পলাশের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর। সে এখন হাসপাতালে মূমুর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। আমি এই সন্ত্রাসী ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, অবিলম্বে দুস্কৃতিকারিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহবান জানাচ্ছি। আহতদের এবং গুরুতর আহত পলাশের আশু সুস্থতা কামনা করছি।