লক্ষ্মীপুরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় কৃষক দলের কর্মী নিহত, আহত অর্ধশতাধিক

প্রতিনিধি লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসুচি চলাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় কৃষক দলের কর্মী সজিব নিহত হয়েছেন ও অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধসহ গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমা হল ও রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
পুলিশ, বিএনপি ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বিকেল চারটার দিকে শহরের গোডাউন রোড এলাকার বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর বাসভবন থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়। সাড়ে চারটার দিকে রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের কাছে পদযাত্রাটি পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে পদযাত্রা সামনের দিকে এগিয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতারাও যোগ দেন। এ সময় তিন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমা হল এলাকা, রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতাল, মটকা মসজিদ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মৃত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। শরীরে বেশ কিছু কোপানোর জখম আছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়। বর্তমানে তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
জেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরি গণমাধ্যমকে বলেন বিএনপির পদযাত্রা করার সময় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা মিছিলে চোরাগুপ্তা হামলা চালায়। তাদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কৃষক দলের কর্মী নিহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ অসংখ্য গুলি করে । গুলিতে তিনজন গুরুতর আহতসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের হাসাতালে দেখতে গেলে ওপুলিশ দেখতে দেয়নি। এদের তিন জনের অবস্থা খুবই খারাপ।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় পুলিশ বাধা দেয়। নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলায় অংশ নেয়। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মো. সজীব নামের কৃষক দলের একজন কর্মীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশের ছররা গুলিতে তাঁদের ৩০ থেকে ৪০ নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে তিনি দাবি করেন।
অন্যদিকে পুলিশ দাবি করেছে, বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলায় পুলিশের ২০ থেকে ২৫ সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের জেলা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।