লাগাতার আন্দোলনে সরকারের বিদায় অবশ্যম্ভাবী
১২ দলীয় জোটের সমাবেশে বক্তারা

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে হলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের বিকল্প নেই। আর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হলে আন্দোলনের বিকল্প নেই। আজকে বর্তমান সরকারের বিদায়ের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। সামনে লাগাতার আন্দোলন আসছে। খুব শিগগিরই এই সরকার বিদায় নিতে বাধ্য হবে। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। এসময় মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমানের কারাদন্ডের সমালোচনা ও তার মুক্তি দাবি করেন নেতারা।
আজ শনিবার বিকেলে এক সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন। "গণতন্ত্রের ঘাতক, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও সর্বনাশা অনাচারে লিপ্ত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের লক্ষ্যে ১ দফা দাবিতে এবং আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে" ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে এই সমাবেশ হয়। মাওলানা সামিউল ইসলামের কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়।
১২ দলীয় জোট প্রধান জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজউদ্দিন টিটুর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক দলের (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, ইসলামিক ঐক্যজোটের মহাসচিব আব্দুল করিম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন, অতিরিক্ত মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের আবুল মনসুর ভুইয়া, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির সাধারণ সম্পাদক মানসুর আলম শিকদার, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, যুগ্ম মহাসচিব এ এস এম শামীম, বাংলাদেশ এলডিপির এম এ বাসার, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব আমিনুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ও শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, এই সরকারের পতনের শেষ ঘন্টা বেজে গেছে। আদিলুর রহমানকে দন্ড দেওয়ার মাধ্যমে গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক মারা হলো। এই সরকার আমাদের সভা সমাবেশর অধিকার কেড়ে নিয়েছে। পেটোয়া পুলিশ বাহিনী দিয়ে হামলা করা হয়েছে। এসব করে শেষ রক্ষা হবেনা।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও তার কন্যা সেলফি তোলার মাধ্যমে চরম হ্যাংলামি করেছে। অথচ কদিন আগেই তিনি বললেন- ২০ ঘন্টা জার্নি করে তিনি আমেরিকা যাবেন না। সেখানে তিনি সেলফি তোলার জন্য উম্মাদ হয়ে গেছেন। এটা বাংলাদেশের জন্য লজ্জাস্কর ঘটনা। দেশের মান ইজ্জত সবকিছুই বিসর্জন দিয়েছে। এদেরকে আর ক্ষমতায় রাখা যায় না। এই সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। বর্তমান অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। বুটের তলায় চাপা দিয়েছে। সেজন্যই তারা নিশিরাতে ভোট করে ক্ষমতায় আছে। আজকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশিত হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের গণতন্ত্র লাইফ সাপোর্টে আছে।
বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, দেশ ও জাতি আজ চরম ক্রান্তিকালে উপনীত হয়েছে। কারণ বর্তমান বিনাভোটের সরকার জোর করে ক্ষমতায় আছে। আবারও ভোট ছাড়াই নির্বাচন করলে তারা যা খুশি করবে। তবে এবার ডু অর ডাই। লাগাতার আন্দোলন আসছে। এছাড়া বিকল্প নেই। আমরা লড়াই করেই এই সরকারের পতন ঘটাবো ইনশাআল্লাহ।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম বলেন, এই সরকার ও জনগণের রাস্তা হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ। লাগাতার আন্দোলন শুরু হলে এই সরকার পালানোর পথ পাবেন না।
শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী বলেন, এই সরকারের ভবিষ্যত অন্ধকার। এদেরকে বিদায় নিতেই হবে।
আহসান হাবিব লিংকন বলেন, বর্তমান সরকার জাতির সঙ্গে প্রতারণা করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আবারও যারা প্রতারণার নির্বাচনের স্বপ্ন দেখে ইনশাআল্লাহ দেশে তাদের বিচার হবে কবরও হবে। এমনকি যারা এই প্রতারক সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে তাদেরকে কালো তালিকাভুক্ত করে বিচার করা হবে।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার নৈতিকতা হারিয়েছেন। তিনি যত তাড়াতাড়ি বিদায় নেবেন তত তাড়াতাড়ি দেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষ রক্ষা পাবেন। তা না হলে আওয়ামী লীগ সরকার পালানোর পথ পাবেন না। সুতরাং সময় থাকতে পদত্যাগ করে বিদায় নিন। মীরজাফরের ভুমিকায় অবতীর্ণ হবেন না।