ল্যাবরেটরি থেকে কোভিড ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা: চীনের শীর্ষ বিজ্ঞানী

বিবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন চীনের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল’ বা সিডিসির সাবেক প্রধান প্রফেসর জর্জ গাও।

ল্যাবরেটরি থেকে কোভিড ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা: চীনের শীর্ষ বিজ্ঞানী

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: ল্যাবরেটরি থেকে কোভিড-১৯ ভাইরাস লিক হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন চীনের একজন সাবেক শীর্ষ বিজ্ঞানী। বিবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন চীনের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল’ বা সিডিসির সাবেক প্রধান প্রফেসর জর্জ গাও। চীনে মহামারি নিয়ন্ত্রণে তার বেশ বড় ভূমিকা ছিল। এছাড়া তিনি কোভিডের উৎস খুঁজে বের করতে বহুদিন ধরেই গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, চীনের সরকার এরইমধ্যে উহান ল্যাবরেটরি থেকে কোভিড ভাইরাস লিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশ কয়েকবার নাকচ করে দিয়েছে। চীনের এই শহরেই ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে কোভিড ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। যদিও রোগটিকে আলাদা করে শনাক্ত করতে আরও এক মাস সময় লাগে বিজ্ঞানীদের। বিশ্বের প্রথম শহর হিসেবে কোভিড লকডাউন জারি করা হয় উহানে। এখান থেকেই পরবর্তীতে ইউরোপ-আমেরিকাসহ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে কোভিড-১৯।

তবে চীন সরকারের মতো এতটা নিশ্চিত নন প্রফেসর গাও। বিবিসি রেডিও ৪কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই বিজ্ঞানী বলেন, সবসময়ই সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। এটাই বিজ্ঞান। এখানে কোনো সম্ভাবনাকেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। গত বছর সিডিসি থেকে পদত্যাগ করেছেন প্রফেসর গাও। বর্তমানে তিনি চীনের ‘ন্যাচারাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন অব চায়না’র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।

প্রফেসর গাও জানান, চীন সরকার যেভাবে কোনো ধরণের লিকের কথা অস্বীকার করেছে, তারা নিজেরা যদিও অতটা নিশ্চিত ছিল না। কারণ সে সময় এ নিয়ে একাধিকবার আভ্যন্তরীণ তদন্ত করেছে সরকার। তবে সরকার কোনো সন্দেহজনক কিছু পায়নি। যে ভাইরাসটি কোভিড সৃষ্টি করে, তা যে বাদুড় থেকে এসেছে সেটি প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু কীভাবে এটি বাদুড় থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করলো তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

তবে বিজ্ঞানীরা প্রথম থেকেই বলছেন, দুইটি উপায়ে মানুষের শরীরে কোভিড ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। প্রথমত, এটি হয়ত প্রাকৃতিকভাবেই বাদুর থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করেছে। হয়ত মধ্যবর্তী কোনো প্রাণী ছিল, যেটি নিজে বাদুর থেকে আক্রান্ত হয়েছে এবং পরবর্তীতে মানুষ ওই প্রাণী থেকে আক্রান্ত হয়েছে। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, এটি হওয়ার সম্ভাবনাই আসলে বেশি।

যদিও আরেকটি উপায় হতে পারে যে, হয়ত গবেষণাগার থেকেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। গবেষণাগার থেকে ছড়ানোর ক্ষেত্রে আবার প্রশ্ন উঠে যে, এটি কি ইচ্ছাকৃতভাবে ছড়ানো হয়েছে নাকি দুর্ঘটনাবসত বিষয়টি ঘটেছিল।