‘সিস্টেমটা যারা দুর্নীতিগ্রস্ত করেছে তাদের পরিবর্তন আসবে’

ক্রীড়া উপদেষ্টা বললেন

‘সিস্টেমটা যারা দুর্নীতিগ্রস্ত করেছে তাদের পরিবর্তন আসবে’

প্রথম নিউজ, খেলা ডেস্ক: চলতি মাসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালানোর পর পতন হয় সরকারের। এরপর গঠন করা হয় নির্বাচনকালীন সরকার। ক্রীড়া ক্ষেত্রের দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে নিয়মিত। বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী ফেডারেশন ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) নিয়েও বের হচ্ছে নানা দুর্নীতির খবর। যেগুলো নজরে এসেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, তিনি ব্যক্তি নয়, সিস্টেমের সংস্কার করতে চান। গতকাল বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে করেন আসিফ মাহমুদ। সেখানে সাংবাদিকের প্রশ্নোত্তরের একপর্যায়ে বিসিবিসহ বাকি ফেডারেশনগুলোতে দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। বিশেষ করে বিসিবি সভাপতি পাপনসহ তার পরিচালনা পর্ষদের শীর্ষ বিভিন্ন পরিচালকদের নানা দুর্নীতি, অপকর্ম, অর্থ আত্মসাৎ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর আসছে। আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘ক্রীড়া ফেডারেশনগুলার অপকর্ম ও দুর্নীতি নিয়ে এই সংবাদ প্রকাশের জন্য গণমাধ্যমগুলোকে ধন্যবাদ। 

আমরা চেষ্টা করছি যারা এসব অপকর্মে জড়িত তাদের বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার। ইতিমধ্যে বিসিবির সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। চেষ্টা চলছে নিজ নিজ ক্রীড়া ফেডারেশনের গঠনতন্ত্র যেন গণতান্ত্রিক ধারায় চালিত হয় সেই সিস্টেম চালু করার।  সিস্টেম পুনর্গঠন করার। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি সিস্টেমের সংস্কার করবো, ব্যক্তির নয়। সিস্টেমটা যারা দুর্নীতিগ্রস্ত করেছে, তাদের পরিবর্তন আসবে এটাও সুনিশ্চিত।’ ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোতে একনায়কতন্ত্রও বন্ধ করতে চান আসিফ মাহমুদ। এছাড়া ফেডারেশন-গুলোর গঠনতন্ত্রকে আরও গণতান্ত্রিকভাবে গড়ে তোলার কথাও বলেন তিনি। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোতে একনায়কতন্ত্রের বিপক্ষে। বিষয়টি নিয়ে করণীয় কাজগুলো প্রক্রিয়াধীন। আমি এখনই এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না। আশা করি দ্রুতই আপনাদের একটা সুখবর দিতে পারবো। আমরা বোর্ডে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মনোযোগ দিচ্ছি গঠনতন্ত্রের দিকে। যারা নতুন দায়িত্বে আসবে বা পাবে, গঠনতন্ত্রকে আরও গণতান্ত্রিকভাবে গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি যে অনিয়ম, দুর্নীতিগুলো এত দিন হয়েছে, সেগুলোও প্রকাশ করতে হবে যাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে নতুনভাবে সাজানো যায়। শুধু ক্রিকেট বোর্ড নয়, অন্য ফেডারেশনগুলোর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।’

সরকার পরিবর্তনের পর ক্রীড়াঙ্গনের অনেক ফেডারেশনেই নেতৃত্বের শূন্যতা দেখা দিয়েছে। যেমন কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকই ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার। পুলিশের চাকরি থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়ায় পদগুলো এখন শূন্য। এছাড়া কয়েকটি ফেডারেশনে কর্মকর্তারা গা ঢাকা দিয়েছেন। এই শূন্যতা পূরণে করণীয় নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘ক্রীড়া ক্ষেত্রে অন্যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির যে অভিযোগগুলো আছে, সেগুলো তদন্ত করবো। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভবিষ্যতে যাতে এমন কিছু না হয়, এরই মধ্যে আমরা বিসিবির সঙ্গেও কথা বলেছি।’

বাংলাদেশের সব খেলাকেই রাজনীতিমুক্ত করার অঙ্গীকার করেছেন আসিফ মাহমুদ। ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘খেলাধুলাকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার একটা এজেন্ডা আমাদের আছে। সে জন্য আমরা একটা সার্চ কমিটি গঠন করে দেব, যারা প্রতিটি ফেডারেশনের বর্তমান অবস্থা দেখবে। যারা কাজ করছেন, দায়িত্বশীল আছেন, তারা আছেন কি না (দায়িত্বে) এবং তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কী, কিসের ওপর ভিত্তি করে সেখানে আছেন, সেগুলো নিয়ে তারা (সার্চ কমিটি) প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন। যে খেলার সঙ্গে যিনি সংযুক্ত এবং কাজ করে আসছেন, তাদের দিয়েই ফেডারেশনগুলো ঢেলে সাজাবো। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা সর্বোচ্চ কমিয়ে আনার চেষ্টা করবো।’