আওয়ামী লীগ সরকার সবক্ষেত্রে ব্যর্থ: মির্জা ফখরুল
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকারের দেশ শাসনের কোনো অধিকার নেই জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। ভালোই ভালোই সরে পড়েন। নইলে দেশের জনগণ জানে কিভাবে সরাতে হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সারাদেশে ধরপাকড়, মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার, জামিন বাতিল করে নেতাকর্মীদের কারাগারে প্রেরণ, পুলিশি হামলা ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের প্রতিবাদে ঢাকায় এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন ঢাকা মহানগরীর থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে জড়ো হওয়ায় ফকিরাপুল মোড় থেকে কাকরাইলের নাইটিংগেল মোড় পর্যন্ত সড়কের দক্ষিণ দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিলো। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের চলমান আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এই সরকারের গণবিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আমাদের আন্দোলন। সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন। আমরা বলতে চাই আমাদের যেসব সহযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন তাদের রক্ত ও আত্মত্যাগ কখনো বৃথা যাবেনা। আমরা তাদের হত্যার মধ্য দিয়ে এই দানবীয় আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ চাই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবিলম্বে মিথ্যা মামলা ও গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধ করেন। ইতিহাস ভুলে যাবেননা। দেশের মানুষ কাউকে ক্ষমা করেনি। দেয়ালের লিখন পড়ুন। সাধারণ মানুষের মনের ভাষা বুঝতে শিখুন। আজকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বেশি কেনো।
তিনি বলেন, সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। তারা মানুষের টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করছে। আর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বিদুৎ আছে পাবেন। কিন্তু আমাদের তো চলে না। দিনে পাঁচ ছয় বার লোডশেডিং হয়। মানুষ অতীষ্ঠ। দেশের কলকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কলকারখানা বন্ধ হলে লাখ লাখ কর্মী বেকার হবে। আজকে তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের অবসরে পাঠাচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের আর দেশ শাসনের কোনে অধিকার নেই। ভালোই ভালোই পদত্যাগ করে সরে পড়ুন। নইলে দেশের মানুষ জানে কিভাবে সরাতে হয় জনগণ জানে। অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেন, যেখানেই বাধা সেখানেই সমাবেশ। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা হবে সমাবেশের শহর। হাসিনা কতো বাধা দিবেন? হাসিনার দিন শেষ। আরেক মুহুর্তে এই সরকারকে কেউ দেখতে চায় না। আমাদের দাবি এখন একটাই সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ। পুলিশ ও প্রশাসনকে বলবো আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন কারণ হাসিনা আর নেই। শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না এবং হতে দেয়া হবে না। এসময় তিনি অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ আবদুস সালাম বলেন, খেলা শুরু হয়ে গেছে। আর আওয়ামী লীগ হাবুডুবু খাচ্ছে। আওয়ামী লীগ লেজ গুটিয়ে দৌড় দিছে। তাদেরকে এখন তারেক রোগে পাইছে। তারেক রহমান দেশে আসলে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। দেশের আসন্ন দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচতে হলে সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। ৫ জনকে হত্যা করেছেন। প্রয়োজনে বুক পেতে দিবো। কিন্তু আপনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। যারা সমাবেশে যাওয়ার আগেই বাস চলাচল বন্ধ করে দেন তাদের কালো তালিকা করা হবে। আমরা অনেক সহ্য করেছি আর নয়। আমরা যেকোনো ত্যাগ শিকারে প্রস্তুত। দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে আওয়ামী লীগের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ আমিনুল হক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, জয়নুল আবদীন ফারুক, সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, কৃষকদলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন,তাঁতী দলের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব মোঃ আব্দুর রহিম, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews