ইউক্রেনে রুশ বোমা হামলায় নিহত ৭
ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনা পোডিলস্ক এলাকায় এ বোমা হামলা হয়েছে।

প্রথম নিউজ ডেস্ক: ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডোনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে বৃহস্পতিবার এ হামলা চলছে। এ হামলায় ইতোমধ্যে সাতজন নিহত হয়েছেন বলে ইউক্রেনের পুলিশ জানিয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দেশটির পুলিশ বলেছে, রাশিয়ার বিমান হামলায় ইউক্রেনের সাত নাগরিক নিহত হয়েছেন। ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনা পোডিলস্ক এলাকায় এ বোমা হামলা হয়েছে। পোডিলস্কের ওডেসা এলাকায় বোমা হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ হামলায় আহত হয়েছেন সাতজন। ১৯ জনের কোনো খোঁজ মিলছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলেছে, ইউক্রেনের মারিওপোল এলাকায় বোমা হামলায় আরও একজন নিহত হয়েছেন।
এদিকে, বিবিসির সাংবাদিকেরা বলছেন, ইউক্রেনের চারপাশ দিয়ে রুশ সেনারা ঢুকে পড়েছেন। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আরও রক্তপাত এড়াতে ইউক্রেনের সেনাদের অস্ত্র পরিত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। এর আগে, ইউক্রেনে রাশিয়ান সামরিক অভিযানের শুরুতেই রাজধানী কিয়েভের সামরিক সদর দপ্তরে মিসাইল হামলার ঘটনা ঘটেছে। একইভাবে হামলার ঘটনা ঘটেছে দেশটির সামরিক বাহিনীর মিসাইল কমান্ড সেন্টারগুলোতেও। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনবাস অঞ্চলে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন। পুতিনের এ ঘোষণা দেওয়ার ভাষণটি যখন টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছিল একই সময়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক চলছিল; যেখানে তাকে থামানোর আহ্বান জানানো হয়। পরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে মিসাইল হামলার অভিযোগ তোলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জেলেনস্কির উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ইউক্রেনের অনেক অবকাঠামো এবং সীমান্তরক্ষীদের ওপর মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। এমনকি দেশটির রাজধানী কিয়েভেও দফায় দফায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, রাশিয়ার নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে বেশ কিছু মিসাইল ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের সামরিক সদর দপ্তরে আঘাত হেনেছে। একইভাবে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির সামরিক বাহিনীর মিসাইল কমান্ড সেন্টারগুলোতেও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এদিকে, হামলা শুরুর পর থেকে এর ব্যপ্তি সম্পর্কে কিয়েভে অবস্থানরত বিবিসির সংবাদদাতা জেমস ওয়াটারহাউসের কাছে কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছেন ইউক্রেনের এক কর্মকর্তা। সরকারি ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ক্রুজ মিসাইল হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া, দক্ষিণাঞ্চলীয় ওডিসা অঞ্চলেও রুশ সেনাবাহিনীর তৎপরতা রয়েছে।
এ ছাড়া, সীমান্ত অতিক্রম করে খারকিভ অঞ্চলেও ঢুকে পড়েছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনের এই অঞ্চলটির দূরত্ব রুশ সীমান্ত থেকে প্রায় ২৫ মাইল দূরে। বিবিসির সংবাদদাতা জেমস ওয়াটারহাউস বলছেন, এখন পর্যন্ত যা বোঝা যাচ্ছে তাতে, এটিকে প্রায় পূর্ণমাত্রার হামলা বলেই মনে হচ্ছে। এদিকে, ইউক্রেনে হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। তবে ইউক্রেনের শহরগুলোতে হামলার কথা অস্বীকার করেছে দেশটি। মস্কোর দাবি, ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো ও স্থাপনাগুলোকেই লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে রুশ বার্তাসংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, কোনো ইউক্রেনীয় শহরে হামলা চালানো হচ্ছে না। নির্ভুলভাবে আক্রমণ করতে সক্ষম অত্যাধুনিক সব অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং বিমান বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা করা হচ্ছে। এ ছাড়া, বিদ্যমান এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে সামরিক আইন জারি করতে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: