তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক মহড়া শুরু করলো চীন, যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা

‘কমব্যাট রেডিনেস প্যাট্রোলস’ নামের এই মহড়া আগামী ১০ই এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।

তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক মহড়া শুরু করলো চীন, যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা
তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক মহড়া শুরু করলো চীন, যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: তাইওয়ানের চারদিকে তিন দিনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়া সফর করেন এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে বৈঠক করেন। এরই কড়া প্রতিক্রিয়া জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং। ‘কমব্যাট রেডিনেস প্যাট্রোলস’ নামের এই মহড়া আগামী ১০ই এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা। খবরে জানানো হয়, শনিবার চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে এই মহড়ার ঘোষণা দেয়। চীনের এই ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাইওয়ানের উত্তর এবং দক্ষিণ পাশে সাগর ও আকাশে এই মহড়া চলবে। পিএলএ বলেছে, তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির সঙ্গে বহিরাগত শক্তি এক হয়ে উসকানি সৃষ্টি করছে। এই মহড়ার মধ্য দিয়ে চীন তাদেরকে হুঁশিয়ার করতে চায়। চীনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য এটি একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। বিশ্বে মাত্র দুটি দেশ তাইওয়ানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। 

সেই দেশ দুটি সফরে মধ্য আমেরিকা গিয়েছেন দ্বীপটির নেতা সাই। তবে সফর থেকে ফেরার পথে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় নামেন এবং ম্যাকার্থির সঙ্গে বৈঠক করেন। যুক্তরাষ্ট্রও ‘এক-চীন নীতি’ মেনে চলে। এর অর্থ হচ্ছে, তাইওয়ানকে চীনের অংশ মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও বাস্তবে দেখা গেছে তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামীদের কাছে বিপুল অস্ত্র বিক্রি শুরু করেছে দেশটি। এটিকে ভালোভাবে নিচ্ছে না বেইজিং। তাছাড়া তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এমন ঘনঘন বৈঠককে নিজের অখণ্ডতার জন্য হুমকি মনে করছে চীন। 

ম্যাকার্থি ও সাইয়ের মধ্যেকার বৈঠক হওয়ার আগেই বেইজিং তাই প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছিল। চীনের শানডং এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ারকে বুধবার পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে যেতে দেখা গেছে। বৈঠক শুরুর আগেই তাইওয়ানের দক্ষিণ-পূর্ব জলসীমার মধ্য দিয়ে যাত্রা করে এই এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে যে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং দ্বীপের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য যথাযথভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত আছে। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি বলেছে, চীন সাই-এর মার্কিন সফরকে সামরিক মহড়া চালানোর অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করছে। এর ফলে আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাইওয়ানের সামরিক বাহিনী শান্ত, যৌক্তিক এবং গুরুত্বের সঙ্গে এর প্রতিক্রিয়া জানাবে। 

এদিকে তাইওয়ানের ব্যাপারে সামরিক চাপপ্রয়োগ না করে কূটনৈতিক পন্থা অবলম্বনের জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাইওয়ান উপকূলে চীনের যুদ্ধজাহাজ পৌঁছানোর পর এই আহ্বান জানায় দেশটি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তাইওয়ানের ওপর সামরিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ বন্ধ করতে বেইজিং-এর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা অর্থবহ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পক্ষে। প্যাটেল দাবি করেন, যেকোনো ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত রয়েছে।