প্রথম নিউজ, শামসুজ্জামান মেহেদী: নামাজ এমন একটা ইবাদত যার মাধ্যমে মানুষের আত্মার প্রশান্তি বৃদ্ধি পায়! ক্লান্ত অবস্থায় মানুষ যদি কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে কাজ শুরু করে তখন দ্বিগুণ উদ্যমে কাজ করতে পারে। ঠিক তদ্রুপ আমরা যখন নামাজ পড়ি তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও আমাদের মগজ দুনিয়ার ঝঞ্জাট মুক্ত থাকে। এ সময় মানুষের আত্মা তার মহামহিয়ান মালিকের সন্তুষ্টি প্রাপ্তির জন্য ব্যকুল হয়ে উঠে। আল্লাহ পাককে যদিও আমরা দেখতে পাই না কিন্তু তিনি যে আমাদের মালিক এটা আমরা অনুভূতি দিয়ে বুঝতে পারি।
নামাজরত অবস্থায় মানুষের মধ্যে এক প্রকার ভরসার জন্ম হয় যে, আমরা মহান সৃষ্টিকর্তার সম্মুখে দন্ডায়মান, অতএব কেউ আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। আবার নামাজ শেষে যখন চোখ বন্ধ করে দোয়া করি এবং নিজের সব অপরাধ মা'বুদের নিকট স্বীকার করি যে, যে বিষয়টি কোন বন্ধু বান্ধব, মাতা পিতা, আত্মীয় স্বজন বা অন্য কারো নিকট বলা যায় না! তখন মানুষ এও মনে করে যে, আল্লাহ পাক 'গাফুরুর রাহীম' তাই তিনি আমাদের ক্ষমা করে দিবেন। এবং বাস্তবে হয়ও তাই কারণ আল্লাহ পাক ঐ বান্দাকে বেশি পছন্দ করেন, যে বেশি তওবা করে এবং বারবার সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ পাকের কাছে বান্দার দীনতা প্রকাশ করাই হলো উত্তম ইবাদত। এভাবে নামাজ আদায় করে মানুষ যখন আবার কর্মক্ষেত্রে ফিরে যায় তখন সে থাকে দুশ্চিন্তামুক্ত। নামাজ মানুষকে নম্রতা ও ভদ্রতা শিক্ষা দেয়! নিয়মিত নামাজি মানুষের সামাজিক অপরাধ থেকে মুক্ত থাকা স্বাভাবিক। আর যার মধ্যে অপরাধ বোধ তাড়া করে সে ব্যক্তিই দুশ্চিন্তা হতে মুক্ত।
নামাজের মধ্যে আমরা যে রুকু সিজদাহ্ করি, বৈজ্ঞানিক ভাবে এর মাধ্যমে শরীরের কিছু কসরত হয়। যখন দুই হাত উপরে উঠানো হয় তখন ফুসফুস সঙ্কুচিত হয়, আবার হাত ছেড়ে দিলে তা বৃদ্ধি পায়, এভাবে শ্বাস প্রশ্বাস চলাচলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। রুকুর সময় পেটে চাপ লাগার কারণে পাকস্থলী শক্তি পায় এবং হজমশক্তি বাড়ে। আবার সেজদার সময় ঘাড়, মাথা মাটিতে লাগানোর ফলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়ে। এভাবে নামাজ মানুষের শারীরিক সুস্থতায় সহায়তা করে! আর শরীর সুস্থ থাকলে মনে দুশ্চিন্তা কম হয়।
এমন অনেক প্রমাণ আছে যে, কঠিন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ডাক্তার বলে দিয়েছেন, আর সুস্থ হবার সম্ভাবনা নেই! এরপর চিকিৎসা বাদ দিয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে নামাজ পড়ে দোয়া করতে করতে একদিন দেখা গেছে সে সুস্থ হয়ে গেছে। এছাড়া নামাজি ব্যক্তি এমন কিছু পাপ থেকে মুক্ত থাকে যার মাধ্যমে তার জীবনী শক্তি অনেক কম ক্ষয় হয়, যেটা একজন বেনামাজির পক্ষে সম্ভব নয়। নামাজি ব্যক্তি নামাজের প্রয়োজনে পবিত্রতা রক্ষা করে চলেন, যার মাধ্যমে অপরিচ্ছন্নতা রোগজনিত ব্যধি হতেও মুক্ত থাকেন। মুসলমানদের আত্মিক শক্তি অন্য ধর্মাবলম্বীদের চেয়ে অনেক বেশি কারণ তারা যে নামাজ পড়ে এ থেকে সাহস ও আত্মার শক্তি বৃদ্ধি পায়। যা মানসিক রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।