বিএনপির সমাবেশে জনতার ঢল দেখে সরকার আতঙ্কিত: মির্জা ফখরুল
তিনি বলেন, শত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহে সমাবেশে জনতার ঢল নেমেছে। এ কারণে সরকারের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিএনপির সমাবেশে জনতার ঢল দেখে সরকার আতঙ্কিত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহে সমাবেশে জনতার ঢল নেমেছে। এ কারণে সরকারের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (একাংশ) ও এনডিপির সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় পৃথক সংলাপ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের পদত্যাগ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ২০ দলীয় জোট শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (একাংশ) ও এনডিপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে একমত হয়েছে বিএনপি।
সংলাপ শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, ময়মনসিংহ সমাবেশের আগের রাতে অঘোষিত কারফিউ জারি করা হয়। রাতে ককটেল, গুলিবর্ষণ করেও কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি। উল্টো পুলিশকে ব্যবহার করে আমাদের ৪শ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। এভাবে দমন করে, গুলি করে, হত্যা করে, গুম করে কোনোদিনই ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না। যতই তারা শক্তিশালী হোক।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই অনির্বাচিত ভোটাধিকার হরণকারী লুটেরা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমরা সংলাপ করছি। আমরা প্রথম পর্যায় শেষ করে দ্বিতীয় পর্যায়ে আলোচনা শুরু করেছি। আজকে আলোচনা করেছি ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে।যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা একমত হয়েছি তা হলো- এই সরকারের পদত্যাগ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তারেক রহমানসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যে মামলা দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবি। এছাড়া আরও রয়েছে- দ্রব্যমূলের ঊধ্র্বগতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং ক্ষমতাসীন দলের লুটপাটের বিরুদ্ধে কমিশন গঠন করা। এই দাবিগুলো নিয়ে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করার বিষয়ে একমত হয়েছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, কিছুদিন আগেও তারা (সরকার) দাবি করেছেন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আজকে কী এমন ঘটেছে যে তারা এখন ভয় পাচ্ছেন? কারণটা হলো প্রতিটা ক্ষেত্রে প্রতিটা জায়গায় ব্যাপক দুর্নীতি। সে কারণে তাদের পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যার কারণে আজকে তারা বিদ্যুৎ দিতে পারছেন না।
তিনি বলেন, ৪৩ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে সচিব-মুখ্য সচিবের বাড়ি তৈরি করার জন্য। এটা শুধু একটা-দুইটা নয়, সমস্ত খাতে। আজকে যে দুর্নীতি চলছে সেজন্যে তারা এই অবস্থায় পড়েছে। এ সরকার এই রাষ্ট্র চালাতে ও পরিচালনা করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
সরকারের কোথাও কোনো ম্যানেজমেন্ট নেই উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সবকিছু দুর্নীতির খাতে চলে গেছে। দুর্নীতির কারণে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
এনডিপির চেয়ারম্যান কারি আবু তাহেরের নেতৃত্বে সংলাপে দলের মহাসচিব আবদুল্লাহ-আল-হারুন (সোহেল), প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান, মূসা মন্ডল, জামিল আহমেদ, ভাইস-চেয়ারম্যান আলী আকবর, সুলতানা পারভীন, মিজানুর রহমান পাটোয়ারী আব্দুল আজিজ, যুগ্ম মহাসচিব হাফেজ আবু সাঈদ অংশ নেন।
বৈঠকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর নেতৃত্বে দলের মহাসচিব শায়খুল হাদিস হাফেজ মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, নির্বাহী সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহিম ইসলামাবাদী, সিনিয়র সহ-সভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা শেখ মজিবুর রহমান, সহ-সভাপতি মাওলানা শহীদুল ইসলাম আনসারী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, মাওলানা আব্দুল হক কাওসারী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা রশিদ বিন ওয়াক্কাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন খান, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মওলানা আতাউর রহমান খান অংশ নেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews