মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার হবে: ড. ইউনূস

প্রথম নিউজ, অনলাইন: মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হবেন।
ক্ষমতায় থাকাকালীন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গুমের পাশাপাশি গত বছরের জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে।
স্কাই নিউজে দেওয়া সাক্ষাতকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই ঘটনার বিচার হবে। শুধু তিনি (শেখ হাসিনা) নন, তার সঙ্গে যুক্ত সকলের অর্থাৎ তার পরিবারের সদস্য, তার সহযোগী এবং তার আশ্রিত লোকজন যারাই এর সঙ্গে জড়িত সবার বিচার হবে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপুল বিক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। তিনি এখনও ভারতেই অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে গোপন আটক কেন্দ্রের একটি নেটওয়ার্ক তত্ত্বাবধানের অভিযোগ রয়েছে যেখানে বিরোধী রাজনীতিবিদদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো, নির্যাতন করা হতো এবং অনেককেই হত্যা করা হয়েছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ- এমন ব্যানারের আওতায় এসব অপকর্ম করা হয়েছে।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ তার বিরুদ্ধে দুটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তারা আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছেন কিন্তু নয়াদিল্লি থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস জোর দিয়ে বলেছেন যে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকুন বা না থাকুন অথবা ভারতে থাকুন তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস সম্প্রতি ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত কুখ্যাত গোপন কারাগারগুলোর মধ্যে একটি পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনি যা দেখেছেন তাতে তিনি হতবাক হয়ে গেছেন। তিনি বলেন, সেখানে যা দেখা গেছে আপনি অনুভব করতে পারেন অথবা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন যে এটি সবচেয়ে কুৎসিত জিনিস।
বাহিনী এবং পুলিশকে ব্যবহার করে শত শত কর্মীকে অপহরণ, নির্যাতন এবং হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি অনেক সামরিক সদস্য এবং পুলিশ সদস্য জুলাই ও আগস্ট মাসে বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস দমন-পীড়নের জন্য অভিযুক্ত হয়েছেন। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার আগের দিনগুলোতে বিক্ষোভ-সহিংসতায় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রায় ১৪০০ জন নিহত হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলো যেন দ্রুত ন্যায়বিচার পায় সে বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছেন ড. ইউনূস। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরের প্রথম দিকেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
টিটিএন