মার্কিন শুল্ক-ভারতের নিষেধাজ্ঞায় চাপে পড়বে দেশের রপ্তানি খাত

প্রথম নিউজ, অনলাইন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের আঁচ সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এসে লাগে। সেটা আপাতত স্থগিত থাকলেও কাটেনি শঙ্কা। এরই মধ্যে ভারত তাদের স্থলবন্দর দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ট্রান্সশিপমেন্টও বাতিল করেছে কিছুদিন আগে। সব মিলিয়ে রপ্তানিতে চাপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারক ও অর্থনীতিবিদরা।
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশর বড় অংশীদার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৪৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়ের ২০ দশমিক ৬০ শতাংশ এসেছে অর্থনৈতিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও জনসংখ্যাবহুল প্রতিবশী দেশ ভারত থেকে। আর আমদানির ক্ষেত্রে ভারত দ্বিতীয় এবং যুক্তরাষ্ট্র পঞ্চম।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১০ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে বাংলাদেশ ৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে এবং রপ্তানি করেছে ১ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য।
গত অর্থবছর বাংলাদেশ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১০ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের আমদানি ছিল ২ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ৭ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার।
ট্রাম্প প্রশাসন ৯০ দিনের জন্য নতুন শুল্কহার স্থগিত করেছে, কিন্তু এখনো তা রয়ে গেছে। যদি আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক কমাতে বা ঐকমত্য তৈরি করতে রাজি করতে না পারি, তাহলে আমাদের উচ্চতর কর দিতে হবে। আরও বিলম্ব ছাড়াই আমাদের আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে যাতে এ হার কমানো যায়।- অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন
আমদানি-রপ্তানির গুরুত্ব বিবেচনায় এ দুই দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক অত্যধিক গুরুত্ব বহন করে। বৈশ্বিক বাণিজ্যের মন্থর গতি ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক স্থবিরতার মধ্যে ভারতে স্থলবন্দর দিয়ে নির্দিষ্ট পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত পাল্টা শুল্কহার বাংলাদেশের রপ্তানিতে আঘাত হানতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ৩ এপ্রিল বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্কারোপ করে যুক্তরাষ্ট্র, যা এতদিন ১৫ শতাংশ ছিল। যদিও তিন মাসের জন্য আপাতত স্থগিত আছে। ১৭ মে ভারত স্থলবন্দর ব্যবহার করে তৈরি পোশাকসহ কয়েকটি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
রপ্তানির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজল কে শামীম এহসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভারতে আমাদের রপ্তানির বেশিরভাগই স্থলবন্দর দিয়ে। স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আমাদের অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে। যদি আমাদের সমুদ্রবন্দর দিয়ে পণ্য পাঠাতে হয় তবে খরচ ও সময় বাড়বে।’