যমুনার ভাঙনে দিশেহারা কৃষক
উপজেলার চিকাজানী চুকাই বাড়ী, বাহাদুরাবাদ, চরআম খাওয়া, হাতিভাঙ্গা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙনের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভাঙন ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
প্রথম নিউজ,জামালপুর: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় যমুনা নদীর ভাঙন তীব্র হয়েছে। এতে আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। চাষের জমি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। উপজেলার চিকাজানী চুকাই বাড়ী, বাহাদুরাবাদ, চরআম খাওয়া, হাতিভাঙ্গা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙনের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভাঙন ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সরেজমিন দেখা যায়, বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটিরপাড়া সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে ফসলি আঁখ নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। বিগত দুই তিন বছর ধরে এই পয়েন্টে প্রায় ৬০ একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কেউ ভাঙন এলাকার পাড়ে এসে খোঁজ খবর নেননি এবং প্রতিরোধের কোন ব্যবস্থাও নেননি। একই সঙ্গে ভাঙনকবলিত এলাকার পাশে বছরের পর বছর ধরে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। প্রশাসনের অনিয়মিত অভিযানের ফাঁক-ফোকর দিয়ে দিনরাতে বালু তুলছে এলাকার প্রভাবশালী মহল। এতে নদী ভেঙে জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বারেক মিয়া, সুলতান মিয়া, ওয়াজ উদ্দিন ও কদ্দুছ বেপারী বলেন, ‘কাকে কী বলবো! আমাদের দেখার কেউ নেই। সবকিছু এখন আল্লাহর হাতে তুলে দিয়ে চেয়ে চেয়ে ভাঙন দেখছি।’ জিল বাংলা সুগার মিলের জিএম আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আঁখের জমি এভাবে যদি প্রতিনিয়ত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়, তাহলে সুগার মিল চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।’
একই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পোল্যাকান্দীতেও নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী নদীভাঙন প্রবণ ইউনিয়ন চিকাজানী, চুকাইবাড়ী ইউনিয়নে প্রতিবছর নদী ভেঙে একরের পর একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি। ভাঙন ঠেকাদে নেই কোনও কার্যকর পদক্ষেপ। প্রতিনিয়ত শত শত একর জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান শেফা বলেন, ‘নদী ভাঙন প্রতিরোধের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ রয়েছে। তারপরেও বিষয়টি আমরা দেখবো। ভাঙন রোধের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিত জানানো হবে।
এ ব্যপারে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাাহী প্রকৌশলী আবু সাইদ বলেন, ‘বিশেষ গুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা রক্ষায় নদী ভাঙন রোধে আমাদের বাজেট দেওয়া হয়। কিন্তু ফসলি জমি রক্ষার জন্য কোনও বরাদ্দ আমাদের দেওয়া হয় না। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এখানে নদী ভাঙন একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। এখানে বাজেট বরাদ্দের সব টাকা দিয়ে দিলেও ভা রোধ করে ফসলি জমি রক্ষা করা যাবে না। তবে আমরা ভাঙন থেকে ফসলি জমি রক্ষার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাজেট দিয়েছি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews






