রাস্তা সংস্কারে টাকা না দেওয়ায় মারধরের অভিযোগ
কামরুল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক।

প্রথম নিউজ,লক্ষ্মীপুর: সরকারি রাস্তা সংস্কার ও প্রশস্তকরণ কাজের জন্য টাকা না দেওয়ায় ৭ জনকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য (মেম্বার) কামরুল ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে। তবে চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে কামরুলকে ভোট না দেওয়ায় ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে আহতদের দাবি।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের করাতিরহাট এলাকায় দু’দফা হামলা চালিয়ে ৭ জনকে আহত করা হয়। কামরুল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক। আহতরা হলেন- করাতিরহাট এলাকার সর্দার বাড়ির হারুন সর্দার, কামাল সর্দার, কবির সর্দার, মনোয়ারা বেগম, মনোয়ারা, ফারুক সর্দার ও সবুজ মিয়া। এরমধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহত ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কাদিরা গোজা-করাতিরহাট সড়কটির সংস্কার ও প্রশস্তকরণ কাজ চলমান রয়েছে। কামরুল রাস্তাটির কাজের তদারকি করছেন। এ কাজে ঠিকাদারের সঙ্গে তিনি অংশীদার বলেও বলাবলি হচ্ছে। রাস্তা সংস্কারের নামে তিনি এলাকাবাসীর কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা দাবি করেন। আহতদের কাছ থেকেও ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় তাদের সঙ্গে কামরুলের বাগবিতণ্ডা হয়।
এর জের ধরে মঙ্গলবার দুপুরে ক্ষিপ্ত হয়ে কামরুল তার ভাই সুমন সরকার, কামাল সরকার ও হেলাল সরকারকে নিয়ে সর্দার বাড়িতে হামলা চালান। পরে বিকেলেও ফের হামলা চালানো হয়। আহতরা জানান, নির্বাচনে ভোট না দেওয়ায় কামরুল তাদের ওপর আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিলেন। এখন ঠুনকো অজুহাতে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে।
আহতদের স্বজন জাহাঙ্গীর আলম সর্দার বলেন, রাস্তাটির একপাশে আমার বাড়ি, অন্যপাশে ক্ষেত। দক্ষিণ পাশে ভেঙে যাওয়া রাস্তা সংস্কার না করে আমার বাড়ির দিকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে আপত্তি জানালে সংস্কারের নামে কামরুল আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এনিয়ে আমার সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এরপরই আমার বাড়িতে দু’দফায় হামলা চালান তিনি।
কামরুল সরকার বলেন, টাকা দাবি ও তাদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগটি মিথ্যা। রাস্তাটি ৭ ফুটের ছিল। এখন ১০ ফুট প্রশস্ত হবে। এজন্য দু’পাশে রাস্তা প্রশস্তকরণ করতে গেলে জাহাঙ্গীররা ঠিকাদারকে বাধা দেয়। মেম্বার হিসেবে বিষয়টি বুঝাতে গেলে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। ভোট দেওয়া না দেওয়া নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার কোনো মতবিরোধ নেই।
চররমনী মোহন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল বলেন, আহতরা নির্বাচনে কামরুল সরকারকে ভোট দেয়নি। কামরুল হয়তো রাস্তা সংস্কার কাজের ঠিকাদারের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এজন্য ভোট না দেওয়া পরিবারটির কাছে টাকা দাবি করেছে। টাকা না দেওয়ায় তাদের মারধর করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মহসিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আহতদের থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: