সুইডেনে যে কোনো সময় হতে পারে জঙ্গি হামলা, যুক্তরাজ্যের সতর্কতা

সুইডেনে যে কোনো সময় হতে পারে জঙ্গি হামলা, যুক্তরাজ্যের সতর্কতা

প্রথম নিউজ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সুইডেনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ নাগরিকদের অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। সম্প্রতি মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর জেরে সুইডেনে জঙ্গি হামলা হতে পারে- এমন আশঙ্কা থেকে এ বিবৃতি দেয় ব্রিটিশ সরকার।

রোববার (১৩ আগস্ট) যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে লেখে, যে কোনো সময় সুইডেনের মাটিতে জঙ্গি হামলা চালানো হতে পারে ও এ সম্ভাবনা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে তীব্র। দেশটির যেসব জায়গায় বিদেশিরা যায়, ওইসব জায়গা হামলার মূল লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সুইডেনের বিভিন্ন জনসমাগমস্থল ছাড়াও যেকোনো ধরণের সার্বজনীন এলাকায় অবস্থানের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ নাগরিকদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা সর্বশেষ ভ্রমণ সতর্কবর্তায় বলা হয়, সুইডিশ কর্তৃপক্ষ সফলভাবে হামলার কয়েকটি পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে ও সন্দেহভাজন কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। তবে এরপরও জঙ্গি হামালার জোর আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। অন্যদিকে, সুইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদের উপদেষ্টা হেনরিক ল্যান্ডারহোম এক বিবৃতিতে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে সুইডেন ছাড়াও বিদেশের মাটিতে সুইডেনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টি ব্যবসায়ী ও সুইডিশ নাগরিকদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

কোরআন পোড়ানোর সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর পর বিদেশে সুইডিশ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে হুমকির মাত্রা বেড়েছে উল্লেখ করে ল্যান্ডারহোম বলেন, নিরাপত্তা পরিস্থিতির এমনভাবে অবনতি হয়েছে যে, সন্ত্রাসীদের কাছে সুইডেন একটি তালিকাভুক্ত অগ্রাধিকারের দেশে পরিণত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গত ১৯ জুলাই ইরাকে সুইডেনের দূতাবাসে ভাংচুর, ৯ অগাস্ট লেবাননে সুইডেনের দূতাবাসে হামলার চেষ্টা ও ১ অগাস্ট তুরস্কে সুইডিশ কনসুলেটের এক কর্মীকে গুলি করার বিষয়টি আমলে নিয়ে ঝুঁকির বিষয়ে এ মূল্যায়ন করা হয়েছে। সাম্প্রতিক অস্থিরতার ফলস্বরূপ যুক্তরাজ্য এখন সুইডেনে অবস্থানরত ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বলের পরামর্শ দিয়েছে। যুক্তরাজ্য তার বিবৃতিতে সুইডেনকে জঙ্গি হামলার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা দেশ হিসেবে বিবেচনা করছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিদেশে সুইডিশ দূতাবাসগুলো বেশ কয়েকটি হামলার শিকার হয়েছে। জুনের শেষের দিকে স্টকহোমে এক মসজিদের বাইরে কোরআন পোড়ানোর ঘটনার পর বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসে হামলা চালানো হয়। তার কয়েক সপ্তাহ পর স্টকহোমে ইরাকি দূতাবাসের বাইরে পরিকল্পিত কোরআন পোড়ানোর কয়েক ঘন্টা আগে বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসে আগুন দেওয়া হয়।

কোরআন পোড়ানোর ঘটনাগুলোতে নিন্দা জানিয়ে তখন বিবৃতি দেয় অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) ও তাদের ৫৭টি সদস্য দেশ। এছাড়া লেবাননের হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ কোরআন পোড়ানোর তীব্র নিন্দা করেছেন ও তরুণ মুসলমানদের যেকোনো মূল্যে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।

বিশ্বের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাও সুইডেনের বিরুদ্ধে হামলার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশ ও তাদের একাধিক নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদরাও হামলার আহ্বানে সমর্থন দিয়েছেন বলে দাবি করেন সুইডিশ নিরাপত্তা পর্ষদের উপদেষ্টা হেনরিক ল্যান্ডারহোম।