নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে, সরকার নির্বিকার: গয়েশ্বর

তিনি বলেন, ঘরে থাকলেও খুন হবেন, গুম হবেন। এমন অবস্থার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ চলতে পারে না।

নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে, সরকার নির্বিকার: গয়েশ্বর
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: দেশে নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে আর সরকার নির্বিকার রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, প্রত্যেকটি জিনিসপত্রের দাম লাগামহীন। করোনার কারণে শিল্প কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। বেকারত্ব বাড়ছে। নতুন কোনো শিল্প কারখানায় নাই। মানুষের আয়ের, কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা নাই। দিনমজুররা‌ কাজ পায় না।‌ বাজারে গেলে জিনিসপত্রের দাম এমন অবস্থায়। তারা ভাবচ্ছে, তাদের কোনো দায় নাই!

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে যুবদলের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঘরের নিরাপত্তা নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘরে থাকলেও খুন হবেন, গুম হবেন। এমন অবস্থার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ চলতে পারে না।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ১০ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এই ১০ লক্ষ কোটি টাকা যদি দেশে বিনিয়োগ হত, তাহলে অনেক শিল্প কারখানা হত। অনেক রপ্তানি যোগ্য পণ্য উৎপাদিত হত। কর্মসংস্থান হত। তাহলে আমাদের যুব সমাজকে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরতে হত না। দেশে যদি কাজ থাকত তাহলে কোনো যুবক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে বিদেশে যেত না। সেই দিকে সরকারের কোনো নজর নাই।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ওপার থেকে সীমান্তে একের পর এক গুলি করে পাখির মত মানুষ মারছে। বর্ডার গার্ড নিরব, তাহলে অস্ত্র কেনো, অস্ত্র কী দেশের মানুষকে মারার জন্য? জনগণের টাকায় অস্ত্র কেনে সরকারর। সেই অস্ত্র ব্যবহার করে দেশের জনগণের বিরুদ্ধে। অন্যায়ের প্রতিবাদ যারা করে তাদের বিরুদ্ধে। গণতন্ত্র যদি না থাকে, তাহলে আইনের শাসন থাকে না। জবাবদিহিতা থাকে না। যখন গণতন্ত্র থাকে না তখন সব কিছু নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে যায়। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে পড়ে টানাটানি।

তিনি বলেন, সরকার মনে করে উক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণ নিয়ে বিশ্ববাসী ব্যস্ত। এই সুযোগ আরও কিছু অপকর্ম এবং পুলিশ বাহিনী মনে করছে তাদের উপর আর কোনো নিষেধাজ্ঞা আসবে না। আসবে কি আসবে না, তা জানি না। আমি বলব সোজা পথে সোজাভাবে চলুন। ভালো হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র দিয়ে, পোশাক পড়ে প্রফেশনাল গুন্ডা-মাস্তানের মতো যদি জনগণের মুখোমুখি দাঁড়ান তাহলে দেশে গৃহযুদ্ধ অনিবার্য। কারণ কেউ হাত গুটিয়ে ঘরে বসে থাকবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সরকারি দলের লোকদের বলব, ভালো হয়ে যান৷ ভোটাধিকার ফেরত দিন। দেশে যদি এত উন্নয়ন করেন তাহলে জনগণের কাছে যেয়ে ভোট চাইতে ভয় পান কেন? কারণ উন্নয়নের নামে জনগণের পকেট কেটেছেন। উন্নয়নের নামে জনগণের ভোটাধিকার বঞ্চিত করেছেন। তাই জনগণের মন আজ বিক্ষুব্ধ। যে কোনো মুহূর্তে বিস্ফোরণ ঘটবে। এই বিস্ফোরণ ঠেকিয়ে রাখার ক্ষমতা এই সরকারের নাই। 

তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারি যাদের বেতন ভাতা জনগণের টাকায় তাদেরকে বলব- জনগণের পক্ষে আসুন, জনগণের পক্ষে নামুন। এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন না। দেশটাকে ধ্বংসের দিকে ঢেলে দিবেন না। কারণ দেশটা আমার আপনার সকলের। দেশটা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের।

তিনি আরও বলেন, অবিচারের প্রথম শিকার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দ্বিতীয় শিকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমরা অপেক্ষায় আছি, আমাদের অনেক জেল দিয়েছেন, সাজা দিয়েছেন। আমাদেরকে হয়ত জেল দিবেন, সাজা দিবেন, কারাগারে দিবেন। তারপরও আমার মনে হয় আপনাদের শেষ রক্ষা হবে না।

যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আবদুস সালামসহ যুবদলের নেতারা।

যুবদলের বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল দশটা আগে থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে শুরু করে। নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে এ সময় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom