নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সম্পদ
ঝিনাইদহে শিশু হাসপাতাল

প্রথম নিউজ, ঝিনাইদাহ: ঝিনাইদহ শিশু হাসপাতালটি এক যুগের অধিক সময় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে। শিশু হাসপাতালটি ২০০৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কোনো লোকবল নিয়োগ না দিয়ে বন্ধ রাখার কারণে এক্স-রে মেশিন, কয়েকটি ইয়ারকন্ডিশন, কম্পিউটার, ফ্যান, আলমারি, জানালা, দরজা, চেয়ার, টেবিলসহ কোটি কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি চুরি হয়েছে এবং নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘ এক যুগ শিশু হাসপাতালটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও কোনো এমপি বা জনপ্রতিনিধি হাসপাতালটি চালু করার উদ্যোগ নেয়নি। যে কারণে এই জেলার মানুষ শিশু স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। গত ২০২১ সালে সদর হাসপাতালের কয়েকজন ডাক্তারের সহযোগিতায় ও এই শহরের কিছু দানশীল ব্যক্তিদের আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে হাসপাতালটি কোনো রকম পুরনো যন্ত্রপাতি মেরামত করে চালু করা হয়েছে।
সরকার ২০০৮ সালে লিসটেম-৫০০ মডেলের একটি অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন ক্রয় করে ঝিনাইদহ সরকারি শিশু হাসপাতালের জন্য। শিশুদের রোগ নির্ণয় ও সুচিকিৎসার জন্য এই এক্স-রে মেশিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু ৬ বছর শিশু হাসপাতালের স্টোরে বাক্সবন্দি থাকার পর বহু চিঠি চালাচালি করে ২০১৪ সালে এক্স-রে মেশিনটি ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে আনার পর দেখা যায় এক্স-রে মেশিনের মধ্যে ইঁদুর ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ তার ও কম্পিউটারাইজড সিস্টেম নষ্ট করে দিয়েছে। মেশিনটি কোনো রকম মেরামত করে চালানোর চেষ্টা করা হলেও সব অংশ সচল করা যায়নি। ফলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগে গত ৭ বছর ধরে অচল হয়ে পড়ে আছে ৬০ লাখ টাকা মূল্যের বিশাল সাইজের এই এক্স-রে মেশিনটি। জানা যায়, আগামী জুনে বরাদ্দ আসলে এক্স-রে মেশিন মেরামত করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগের দায়িত্বে থাকা শফিকুল ইসলাম জানান, ২০০৮ সালে শিশু হাসপাতালের জন্য সরকার মেশিনটি বরাদ্দ দেয়। ওই সময় এক্স-রে মেশিনটি আধুনিক ছিল। কিন্তু দীর্ঘ ৬ বছর শিশু হাসপাতালে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় ইঁদুর মেশিনের তারগুলো কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলে। এক্স-রে মেশিনের ফ্লসকপি সাইট নষ্ট হলেও রেডিওগ্রাফি সাইটটি সচল ছিল। মেরামতের অভাবে এখন পুরোটাই অচল হয়ে পড়ে আছে। আগামী জুনে বরাদ্দ পেলে মেরামত করার চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, লিসটেম-৫০০ মডেলের এক্স-রে মেশিনটির মূল্য আনুমানিক ৬০/৭০ লাখ টাকা হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ শিশু হাসপাতালের প্রধান ডা. আলী হাসান ফরিদ জানান, তিনি ২০২১ সালে যোগদান করেছেন।
এ বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারবেন না। তবে হাসপাতালটিতে পূর্বে যে সমস্ত যন্ত্রপাতি ছিল তা দীর্ঘ কয়েক বছর বন্ধ থাকার কারণে সবই নষ্ট হয়ে গেছে। তাই শিশু হাসপাতালটি নতুন করে চালু করার জন্য এক্স-রে মেশিনসহ বহু যন্ত্রপাতির চাহিদা মন্ত্রণালয়ে দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, এক্স-রে মেশিনটি শিশু হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে ছিল। সেখান থেকেই মেশিনের বিভিন্ন সাইট নষ্ট হয়ে যায়। আমরা এক্স-রে মেশিনটি মেরামতের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। বরাদ্দ আসলে আশা করা যায় মেশিনটি সচল করা সম্ভব হবে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews