ফের আকাশে ডানা মেলতে পারবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্লেন

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্লেনটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে

 ফের আকাশে ডানা মেলতে পারবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্লেন
ফের আকাশে ডানা মেলতে পারবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্লেন-প্রথম নিউজ

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্লেনটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারা প্লেনে সচরাচর ভ্রমণ করেন অথবা যাদের এ বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে তাদের কাছে আন্তোনভ এন-২২৫ নেমের প্লেনটি এখন কেবলই স্মৃতি।

সোভিয়েত স্পেস শাটল পরিবহন করার জন্য ১৯৮০ সালে এটি তৈরি করা হয়। স্নায়ুযুদ্ধের পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারগো প্লেনটি দ্বিতীয় বারের মতো ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার হামলায় হোস্টোমের বিমান ঘাঁটিতে প্লেনটির শেষ রক্ষা হয়নি।

এরপর আন্তোনভ কোম্পানি প্লেনটির বিষয়ে এক টুইট বার্তায় জানায়, স্বপ্ন কখনো মরে না। প্লেনটি ইউক্রেনীয়দের স্বপ্ন। এর পক্ষে বিশ্বের সব প্রান্ত থেকে সংহতি প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু মিরিয়া (ডাক নাম) নামের প্লেনটি ফের আকাশে উড়তে পারবে কি না তা নিয়েই এখন সংশয় দেখা দিয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের ভাস্কো কোটোভিওসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক হামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত প্লেনটি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। এসময় ইউক্রেনের পুলিশও তাদের সঙ্গে ছিল। যুদ্ধের শুরুর দিকে হোস্টোমেলে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক লড়াই হয়।

ভাস্কো কোটোভিও বলেন, মস্কো বাহিনী প্রথম দিকেই বিমান ঘাঁটিটি দখলে নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে চায়। ফলে সেখানে তারা অ্যাটাক হেলিকপ্টার দিয়ে একের পর এক হামলা চালাতে থাকে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ইউক্রেনের সেনারাও সেখানে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে, যাতে রাশিয়ার কোনো প্লেন সেখানে অবতরণ করতে না পারে।

সিএনএনের ওই সাংবাদিক জানান, একপর্যায়ে আন্তোনভ এন-২২৫ এর সামনের অংশ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। মনে হচ্ছে এর ওপর সরাসরি কোনো গোলা আঘাত হেনেছে। তাছাড়া মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্নেনের একটি পাখা এবং কয়েকটি ইঞ্জিনও। পেছনের দিকটা তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বুলেটের আঘাতে অনেক স্থানে গর্ত হয়ে গেছে।

ভাস্কো কোটোভিও আরও বলেন, প্লেনটির সামনের দিকটা যদি এভাবে ধ্বংস না হতো তাহলে হয়তো মেরামত করা যেত।

কিয়েভভিত্তিক প্রকৌশলী ও বিমানচালনা বিশেষজ্ঞ আন্দ্রি সোভেনকো ১৯৮৭ সাল থেকে আন্তোনোভ কোম্পানিতে কাজ করছেন। প্লেনটির কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তার একটি তালিকা করেছেন তিনি। তার কাছে অনেকগুলো ছবি ও ভিডিও রয়েছে। নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে সেখানে বিমান কোম্পানির কোনো কর্মকর্তাকে এখনো প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, প্লেনটিকে পুনরায় চালু করা খুবই কঠিন কাজ। কারণ এন-২২৫ ব্যবহৃত বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সিস্টেম, পাম্প ও ফিল্টারগুলোর বেশিরভাগই আশির দশকের। একে আগের অবস্থানে নিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব বলেও জানান তিনি।

তবে আশার কথা হলো ফ্ল্যাপ ও আইলারনের পৃষ্ঠতলসহ ডানার অংশগুলো সামান্য ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং সেগুলো সংস্কারযোগ্য হতে পারে। তাছাড়া ছয়টি ইঞ্জিনের অধিকাংশই অক্ষত বলে মনে হয় ও প্লেনের পেছনের অংশটি সেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

সোভেনকো আন্তোনোভ এয়ারলাইন্সের ইতিহাস সম্পর্কে একটি বই লিখেছেন। অভিজ্ঞতার নিরিখে তিনি একমত যে, হোস্টোমেলের প্লেনটি মেরামত করা যাবে না। এটি নয়, এরকম অন্য একটি প্লেন তৈরি করা যেতে পারে বলেও মত দিয়েছেন তিনি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom