মুন্সীগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, আহত দেড় শতাধিক

কর্মসূচি থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এগোতে চাইলে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাধা দেয়।

মুন্সীগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, আহত দেড় শতাধিক
মুন্সীগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, আহত দেড় শতাধিক

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক : মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পুরনো ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। বুধবার বেলা তিনটার পর এই সংঘর্ষ শুরু হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হয়েছেন। জানা গেছে, মুক্তারপুরের পুরনো ফেরিঘাট এলাকায় বিএনপির পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচি থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এগোতে চাইলে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাধা দেয়। এ সময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। পুলিশও রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। এ ঘটনায় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষে সার্কেল এসপি মিনহাজুল ইসলাম, সদর থানার ওসি তারিকুজ্জামান, এসআই সুকান্ত বাউল, দাজল দাস, মাইনুদ্দিন, আসিনুল, অজিদ, মোজাম্মেল হক, কং রায়হান, ইলিয়াস খানসহ অন্তত ১৫ জন পুলিশ আহত হয়েছে। সংঘর্ষে সমকালের সাংবাদিক কাজী সাব্বির আহম্মেদ দীপু, কালবেলার সাংবাদিক মো: রুবেল, দিনকালের সাংবাদিক গোলজার হোসেন, রজত রেখার সাংবাদিক নাজির হোসেন আহত হয়েছেন। জানা যায়, আজ বেলা ৩টার দিকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে যোগ দিতে মিছিল নিয়ে মুক্তারপুর এলাকায় আসে। এ সময় পুলিশ তাদের সেখানে অবস্থান করতে নিষেধ করে। মুক্তাপুর থেকে পরে নেতা-কর্মীরা ট্রাকে করে পুরনো ফেরিঘাট এলাকায় যান। সেখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল আসতে শুরু করে। এ সময় মুন্সিগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম বিএনপির একটি মিছিলের ব্যানার ধরে টান দেন। এতে নেতা-কর্মীরা পুলিশের সাথে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তারা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। প্রথম দিকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট বিএনপির ইটপাটকেলের জবাবে গুলি ছোড়ে পুলিশ। তবে পরবর্তী ৩৫ মিনিটি পুলিশকে কোণঠাসা করে ফেলেন বিএনপির কর্মীরা। তিন দিক থেকে ছোড়া ইটপাটকেলে বেশ কয়েকজন আহত হন। কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে পিছু হটতে হটতে ধলেশ্বরী নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে বিএনপির এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। আহত অন্য নেতা-কর্মীরাও কেউ কেউ মুন্সিগঞ্জ জেলা হাসপাতালে না গিয়ে অন্যান্য হাসপাতালে যান। বিকেল ৪টার দিকে পুলিশের একাধিক দল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জেলা বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘পুলিশের অনুমতি নিয়েই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছিলাম। বেলা তিনটার দিকে আমাদের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে মুক্তারপুর এর দিকে আসছিলেন। তখন পুলিশ আমাদের লোকজনকে মিছিল করতে নিষেধ করে। আমাদের লোকজন মিছিল করা বন্ধ করে দেয়। সে সময় পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মিছিল থেকে ব্যানার টেনে ছিঁড়ে নিতে চায়। তখন বিএনপি নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পুলিশ আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। পরে আমাদের লোকজন আত্মরক্ষার জন্য ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ আমাদের ওপর বৃষ্টির মতো রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং গুলি ছুড়তে থাকে। এতে আমাদের অন্তত ৫০ থেকে ৬০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের গুলিতে আহত একজনের অবস্থা গুরুতর।’

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আলোকে বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। সেই বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ প্রশাসন উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে তারা আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করে। এ সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করি। লাঠিচার্জেও নিয়ন্ত্রণ না এলে এক পর্যায়ে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেও তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। তাদের ইটপাটকেল নিক্ষেপে ৩০-৩৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom