অপবাদ দিয়ে নারীকে মারধর, বসতঘরে তালা ও গরু-ছাগল লুট
কুমিল্লার চান্দিনায় অসামাজিক কার্যালপের অভিযোগে এক নারীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। মারধরের পাশাপাশি ওই নারীর বাড়িতেও দেওয়া হয়েছে তালা। লুট করা হয়েছে নারীর গরু ও ছাগল।
বৃহস্পতিবার সকালে চান্দিনা উপজেলার বরকরই ইউনিয়নের বরকরই গ্রামের বাদশাহ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম রহিমা বেগম (৩৪)। তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন।
ভুক্তভোগী নারীর দাবি, বাড়ি দখলের জন্যই অপবাদ দিয়ে তাকেসহ তার মাকে মারধর ও ঘরে তালা দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই রহিমা বেগেমের ঘর দখলের পাঁয়তারা করছেন তারই মামাতো ভাই খোকন। সম্প্রতি রহিমার বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলেন এ ভাই। বিভিন্ন রটনা ছড়িয়ে এলাকাবাসীকে রহিমার বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলেন তিনি। বৃহস্পতিবার খোকনের নেতৃত্বে কয়েকজন দুষ্কৃতকারী রহিমা ও তার মাকে মারধর করেন। এ সময় খোকন তাদের ঘরে তালা দেয়। একটি গরু ও দুটি ছাগল লুট করে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগী রহিমা বেগম বলেন, ‘১৫ বছর যাবৎ স্বামী না থাকায় আমি রাস্তার কাজ করে কোনো রকমে মা ও মেয়েকে নিয়ে জীবনযাপন করছি। ৭ থেকে ৮ মাস ধরে কাজ বন্ধ থাকায় পাশের একটি বাড়িতে রান্নার কাজ করি। ঈদের আগে আমি অসুস্থ হলে তখন তারা ওই বাড়ির পুরুষকে জড়িয়ে আমাকে অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেন। বৃহস্পতিবার সকালে খোকন আমাকে ও আমার মাকে মেরে একটি গরু ও দুটি ছাগল নিয়ে যায়। বসতঘরে তালা দিয়ে দেন।’
ওই গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘সকালে রহিমার মা তাদেরকে মারধর করার বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। এর আগে রহিমার বিষয়ে যে অপবাদ উঠেছে তা আমি শুনেছি। কিন্তু ওই ঘটনার কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি।’
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত খোকনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। খোকনের চাচাতো ভাই সাইফুল মারধরের বিষয়টি সত্য নয় বলে জানান। তবে, গরু-ছাগল নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সত্য বলে স্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে বরকরই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মজুমদার শিপন বলেন, ‘ব্যাপারটি সম্পর্কে আমি অবগত নয়।’
চান্দিনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি আপনার কাছ থেকে শুনলাম। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
