আন্তর্জাতিক শক্তি চায় দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক : ড. মোশাররফ
বিজয় দিবসের দিন সকালে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুস্পমাল্য অর্পনের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংবাদিকদের কাছে দলের প্রত্যয়ের কথা ব্যক্ত করেন।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: গণতন্ত্র ফেরাতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ‘যুগপত আন্দোলনে রাজপথ নামা’র প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বিজয় দিবসের দিন সকালে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুস্পমাল্য অর্পনের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে দলের প্রত্যয়ের কথা ব্যক্ত করেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকের এই বিজয়ের দিনে আমরা আশা করি, প্রত্যাশা করি- বাংলাদেশ থেকে স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদী সরকারের অবসান হবে, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা সকলে কাজ করছি। আমাদের দলের ঘোষিত ১০ দফার সাথে যারা একমত পোষণ করেছে তারাও ভবিষ্যতে যুগপতভাবে আন্দোলন অংশগ্রহন করবে। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে জনগনকে সঙ্গে নিয়ে এর ফয়সাল ইনশাল্লাহ রাজপথে করবো।
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বিপর্যয়, সামাজিক অবক্ষয় ও গণতন্ত্রহীন সমাজ ব্যবস্থার জন্য আওয়ামী লীগের দায়ী করেন খন্দকার মোশাররফ। আমি ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে চাই যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিলো গণতন্ত্র, যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিলো অর্থনৈতিক সাম্য, সামাজিক ন্যায়-বিচার এবং দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু ৫১ বছর স্বাধীনতার পরে আমাদেরকে বলতে হচ্ছে যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে….তাদের লুটপাট, চাঁদাবাজি, দুর্নীতির কারণে দেশে অর্থনৈতিক বিপর্য্য় সৃষ্টি করেছে, আইনের শাসন নেই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, বিজয়ের এই দিনে আমরা স্মরণ করছি, দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে, আমরা স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের, যারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে, যারা এদেশের মুক্তিযুদ্ধে মা-বোনের ইজ্জত দিয়েছে এবং এদেশের কিছু মানুষ ছাড়া সমগ্র জনসাধারণ যারা মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন করে এই দেশকে স্বাধীন করেছে আমি তাদের সকলকে স্মরণ করছি।
বিএনপি জঙ্গিবাদকে সমর্থন দিচ্ছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এহেন বক্তব্যে প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘‘ এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করছে, বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাস বিকৃত করছে। তারা তাদের সুবিধা মতো কথা বলে। জনগণ কিন্তু সচেতন। জনগন বিচার করবে তারা (আওয়া্মী লীগ সরকার) সঠিক না জনগন সঠিক।”
এ সময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সিরাজউদ্দিন আহমেদ, মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরাফত আলী সপু, মীর নেওয়াজ আলী, আফরোজা আব্বাস, শাম্মী আখতার, নিলোফার চৌধুরী মনি, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, শহীদুল ইসলাম চৌধুরী মিলন, হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কাদের গনি চৌধুরী, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে দলের প্রতিষ্ঠাতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন নেতা-কর্মীরা।
‘সাভারে জাতীয় স্মৃতি সৌধে শ্রদ্ধার্ঘ’:এর আগে সকাল ৯টায় খন্দকার মোশাররফের নেতৃত্বে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সাভারে জাতীয় স্মৃতি সৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুস্পমাল্য অর্পন করেন। তারা কিছুক্ষন মূল বেদীতে নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে সাংবাদিকদের কাছে খন্দকার মোশাররফ হোসন বলেন, ‘‘ আজকে এই বিজয়ের দিনে আমরা স্মরণ করছি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে, আমরা স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধের লাখো লাখো শহীদকে যারা রক্ত দিয়ে আমাদেরকে স্বাধীন করেছে। স্বাধীনতার একান্ন বছর পাড়ি দিয়েছি আমরা কিন্তু দুঃখের বিষয় মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা ছিলো, শহীদদের যে স্বপ্ন ছিলো দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা … ৫১ বছরে এসে বলতে হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনা সম্পূর্ণভাবে ভূলণ্ঠিত। দেশে গণতন্ত্র নাই, অর্থনৈতিক লুটপাট, চাঁদাবাজি। দেশ থেকে বিদেশে অর্থপাচার যার কারণে আজকে আমাদের অর্থনীতি ধ্বংসপ্রায়। দেশের মানুষ দ্রব্যমূল্যর উর্ধ্বগতিতে দিশেহারা, বিদ্যুতের লোডশেডিংএ বিপর্যস্ত। বাংলাদেশের মানুষের অশান্তি এবং যে বিশৃঙ্খলা। সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গায়ের জোরে দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করেছে। আবার ওই ধরনের একটি নির্বাচন করার জন্য সারা বাংলাদেশে বিএনপি নেতা কর্মীদের অত্যাচার-নির্যাতন- নিপীড়ন করা হচ্ছে।”
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে রাজপথে সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মধ্যে আছে : নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি।