ক্ষমা চান অন্যথায় জনগণ ক্ষমা চাওয়ারও সুযোগ দেবে না প্রধানমন্ত্রীকে মির্জা ফখরুল

জনগণের কাছে শেখ হাসিনার ক্ষমা না চাইলে জনগণ তাকে টেনে নিচে নামাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ক্ষমা চান অন্যথায় জনগণ  ক্ষমা চাওয়ারও সুযোগ দেবে না প্রধানমন্ত্রীকে মির্জা ফখরুল
বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে টুস করে নদীতে ফেলে দেয়ার মন্তব্য ও কটুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, জনগণের কাছে ক্ষমা চান। অন্যথায় জনগণ আপনাদের ক্ষমা চাওয়ারও সুযোগ দেবে না। জনগণের কাছে শেখ হাসিনার ক্ষমা না চাইলে জনগণ তাকে টেনে নিচে নামাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নার্ভাস হয়ে পড়েছেন বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তার ক্ষমতার দিন শেষ, শেখ হাসিনা দেখতে পাচ্ছেন আর ক্ষমতায় আসতে পারবেন না।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন। ‘‘প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকির’’ প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি। 

সরকার প্রধানের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন সময় আছে পদত্যাগ করুন। নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। 

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি নিন্দা ও ধিক্কার জানাই প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের জন্য, যিনি বেগম খালেদা জিয়াকে টুস করে পদ্মা থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকির দিয়েছেন। আজকে সমস্ত দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে ধিক্কার ও নিন্দা জানাচ্ছে। কোনও সভ্য এবং গণতান্ত্রিক সমাজে এই ধরণের ভাষা ব্যবহার করা যায় না। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু করার বড়াই করছেন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, পদ্মা সেতু আপনার একার না, আওয়ামী লীগের পৈত্রিক সম্পতিও না।  জনগণের পকেট থেকে যে ট্যাক্স কেটে নিয়েছেন, সেই টাকা দিয়ে করেছেন। এখানে যে দুর্নীতি করেছেন, তা আপনাদের সমস্ত দুর্নীতির সীমা ছাড়িয়ে গেছেন। 

তিনি আরও বলেন, ‘জনগণ জানতে চায়, পদ্মা সেতুর জন্য মানুষের কত টাকা কেটে নিয়েছেন? জাতির কতটাকা আপনারা এই পদ্মা সেতুতে ব্যয় করেছেন, আর কতটাকা নিজেদের পকেটে ভরেছেন’?

আজকে আওয়ামী লীগ উন্নয়ন-উন্নয়ন করে চিৎকার করে বলে উল্লেখ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিসের উন্নয়ন করেছেন, কার উন্নয়ন করেছেন? উন্নয়ন তো করেছেন পি কে হালদারের। উন্নয়ন করেছেন শিক্ষামন্ত্রীর ভাইয়ের, বেয়াইয় মোশাররফের ভাইয়ের। আর আপনারা যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের প্রত্যেকের। তারা এই দেশেকে একটা লুটপাটের রাজত্ব তৈরি করেছেন। জনগণের কোনও উন্নয়ন হয় না।  
  
প্রধানমন্ত্রী নিজেকে একটা দুর্গের মধ্যে বন্ধি করে রেখেছেন বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনি তো স্বেচ্ছায় নিজেকে-নিজে বন্ধি করে রেখেছেন। আপনি তো জনগণকে ভয় পান। জনগণের সামনে আসেন না। জনগণের সামনে আসলে তাদের ভাষা বোঝতে পারতেন। তারা কি বলতে চায় তা বোঝতে পারতেন। 

আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে বলে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রত্যেক দিন অর্থনীতিবিদরা বলছেন- বাংলাদেশের অর্থনীতি রসাতলে যাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছেন। প্রত্যেক দিন খবরের কাজগ খুললে দেখা যায়, লুটপাট হচ্ছে। আর এর সঙ্গে জড়িত সরকারি দলের লোকেরা। 

তিনি আরও বলেন, আপনি বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকি দেন। তিনি হচ্ছেন সেই নেত্রী, যিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। যিনি কোন দিনও নির্বাচনে পরাজয় বরণ করেনি। 
 
বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ বলে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তাকে এখন যদি উন্নত চিকিৎসা দেওয়া না হয়, তাহলে তার জীবণ হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। আমরা বারবার বলেছি, তাকে মুক্তি দেন। তাই আজকে এখান থেকে দাঁড়িয়ে আহ্বান ও দাবি জানাতে চাই, এখনও সময় আছে তাকে মুক্তি দেন। বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেন। আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের যে মামলা আছে, তা তুলে নিন। যারা কারাগারে আছে তাদেরকে মুক্তি দেন।

May be an image of 2 people and people standing

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি'র আহবায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ঢাকা উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনুর যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমানউল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নাল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আমিরুল ইসলাম আলিম,  যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

এছাড়াও জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন নান্নু,  স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি আনু মোহাম্মাদ শামীম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সহ সাধারণ সম্পাদক সর্দার নুরুজ্জামান, সৈয়দ শহিদুল ইসলাম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমানসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom