জনগণ কথা বলতে পারছে, এটাইতো স্বাধীনতা: জোনায়েদ সাকি

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। 

জনগণ কথা বলতে পারছে, এটাইতো স্বাধীনতা: জোনায়েদ সাকি

প্রথম নিউজ, অনলাইন: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের জনগণের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে, এটাইতো স্বাধীনতা, এটাইতো গণতন্ত্র। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। 

জোনায়েদ সাকি বলেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের জনগণের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে, এটাইতো স্বাধীনতা, এটাইতো গণতন্ত্র। এই পরিবর্তনকে স্থায়ী করতে চাই। কার্যকর করতে চাই। দাবি-দাওয়া না থাকলেতো গণতন্ত্র থাকবে না। আপনাদের দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করছি। 
তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ ধরনের বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না। লোকজনকে কম অধিকার, কম মজুরি দিয়ে খাটিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থাকে বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রাজস্ব খাতে ব্যয় কমাতে হবে। তিনি আরও বলেন, ৩০ বছর ধরে একজনের যদি বেতন যদি সাড়ে ১২ হাজার থাকে। একটা দেশে যদি বাঁচার জন্য নূন্যতম মজুরি না থাকে, অধিকার না থাকে তাহলে ঐদেশে গণতন্ত্র থাকতে পারে না। সেজন্য একটা নীতিমালা করা প্রয়োজন। আপনাদের জন্য নূন্যতম বেতন নির্ধারণ করতে হবে।   
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আমাদের সমাজে বৈষম্যের শেষ নেই। গত ৫ আগস্ট এদেশ থেকে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। যারা এই ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। সরকারি কলেজের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারি হবেন এটাইতো স্বাভাবিক। প্রতিষ্ঠানে বৈষম্য থাকলে সেটি ভালোভাবে চলে না। বৈষম্যের বিরুদ্ধে আপনারা যারা আন্দোলন করছেন, আমরা আপনাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করছি।   আপনাদের নিয়মতান্ত্রিক দাবি অব্যাহত রাখেন। এ সময় সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারীদের চাকুরী রাজস্বখাতে স্থানান্তরসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো হলো- 
১. সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারীদের চাকুরী রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। (শূন্য পদের বিপরীতে এবং নতুন পদ সৃজনের মাধ্যমে স্ব স্ব কলেজে অস্থায়ীভাবে কর্মরতদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাজস্বখাতভূক্ত করতে হবে।) 
২. কর্মরতদের ব্যতিরেকে নতুন নিয়োগ বন্ধ করতে হবে, অস্থায়ীভাবে কর্মরতদের চাকুরীর নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে।
৩. রাজস্বখাতভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সরকারি বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন-ভাতাদি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 
গোলটেবিল বৈঠকে সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারীরা বলেন, আমরা বৈষম্যের শিকার। আমরা সরকারি কলেজের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করি। কিন্তু আমাদের চাকরি বেসরকারি রয়ে গেছে। আমাদের জীবনের মান উন্নয়ন হয়নি ।অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তারা বলেন, আমরা আশা করি আপনারা আমাদের এই দাবিগুলো মেনে নিবেন। আপনারা দাবিগুলো মেনে নিলে আমাদের জীবনের মান উন্নয়ন হবে। 
গোলটেবিল বৈঠকে সরকারি কলেজের বেসরকারি অসহায় কর্মচারীদের পক্ষ থেকে এক লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি কামনায় আগস্টের ২১ তারিখে একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনসহ প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়কে স্মারকলিপি প্রদান করি। তিনি আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করবেন মর্মে তাঁর প্রেস সচিব দ্বারা মৌখিক আশ্বাস প্রদান করেন। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার মৌখিক আশ্বাস পেয়ে আমরা আমাদের কর্মসূচী সমাপ্ত ঘোষণা করি।
 
পরবর্তীতে আমাদের বিষয়ে কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ না হওয়ায় সেপ্টেম্বরের ৪ তারিখে পুনরায় প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষা সচিবের কার্যালয়সহ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি মহোদয়গণকে স্মারকলিপি প্রদান করি। 
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, দুঃখের বিষয় ২০১৩ সাল থেকে অদ্যবধি মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচী, ১৮দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন, সাংবাদিক সম্মেলন, নিজ নিজ কর্মস্থলে ১ ঘন্টা প্রতিকী কর্মবিরতিসহ একাধিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তার পরেও আমাদের বিষয়ে কোন সরকারই এখনও পর্যন্ত কোন দৃশ্যমান কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। যার ফলে আমরা নিরুপায় হয়ে আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ভবিষ্যতে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণে বাধ্য হবো।
গোলটেবিল বৈঠকে বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণী সরকারি কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. আজিম, সাধারণ সম্পাদক মো. মোক্তার হোসেন, সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের আহ্বায়ক মো. আমিনুল ইসলাম, সদস্য সচিব মো. ফরিদুল ইসলাম, সমন্বয়ক মো. আব্দুর রশিদ, সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক দুলাল সরকারসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগ থেকে আসা সমন্বয়করা বক্তব্য রাখেন।