ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায় ইসলামি সমমনা দলগুলো

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায় ইসলামি সমমনা দলগুলো

প্রথম নিউজ, অনলাইন: চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ইসলামি সমমনা দলগুলো। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকালে পল্টনে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে দলগুলোর নেতারা এই দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আমাদের পরিষ্কার দাবি আমরা চাই এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হোক। এ বিষয়ে আমরা সমমনা দলগুলোর সঙ্গে একমত হয়েছি। আশা করছি আমাদের এ দাবি কার্যকর হবে। 
সংবাদ সম্মেলনে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, সংস্কার হচ্ছে চলমান প্রক্রিয়া। আর সরকার তো সংস্কারের জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে পাঁচটা বিষয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে এই সংস্কারের বিষয়ে একটা কপি দিয়েছেন। এবং আমরা এর জবাবও পাঠিয়ে দিয়েছি। সেই হিসেবে তো সংস্কারের কাজ অনেক দূর এগিয়েই আছে। আর সংস্কার হচ্ছে এমন একটা বিষয় যে এর কখনো কোন শেষ নেই। এর জন্য প্রয়োজনীয় যে সংস্কার যা না করলেই না হয় সেগুলো করেই দ্রুত নির্বাচন দেয়া প্রয়োজন, আর এর থেকে যেন সরকার পিছপা না হয়। 
তিনি বলেন, আমাদের কথা স্পষ্ট নির্বাচনের জন্য যদি সুনির্দিষ্ট সময় দেয়া না হয় তাহলে সংস্কারগুলো দ্রুত সম্পন্ন হবে না।
সমমনা ইসলামী দলসমূহের বৈঠকে ৯ দাবি প্রস্তাবনা করা হয়: 
১. সংবিধানের মূলনীতিতে ‘মহান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন করতে হবে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত ‘বহুত্ববাদ’ সংবিধানে সংযুক্ত করা যাবে না।
২. সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা বৃদ্ধি ও শিল্পখাতে নতুন গ্যাস সংযোগে অতিরিক্ত (৩৩%) মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।
৩. গাজায় ইসরাইলী গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
৪. মুসলমানদের সম্পদ লুট ও ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংসের জন্য ভারতে পাশকৃত মুসলিম ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল বাতিল করতে হবে।
৫. প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
৬. পিলখানায় বিডিআর হত্যা, শাপলা চত্বরে গণহত্যা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে গণহত্যা-সহ বিগত ১৫ বছরে গুম, খুন, হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার করতে হবে।
৭. হেফাজতের নেতা কর্মীসহ আলেম-উলামাদের নামে দায়েরকৃত ও অন্যান্য রাজনৈতিক মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।
৮. ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের অপতৎপরতা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৯. ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান বা পুনর্বাসনে রোধ করতে হবে। ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামীলীগের বিচার করতে হবে। এ জন্যে জুলাই অভ্যুত্থানকালীন সময়ের মত জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে হবে। 
খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল মাজেদ আতহারী, মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন প্রমুখ।