দাম বৃদ্ধির কারসাজিতে জড়িতদের শাস্তি চায় ক্যাব
গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই স্বার্থপর ও লোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি।

প্রথম নিউজ, অনলাইন: কারসাজির মাধ্যমে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২৬০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করে বাজারকে অস্থিতিশীল করেছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাদের উপযুক্ত বিচারের মাধ্যমে শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই স্বার্থপর ও লোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি। বেলা সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে মানববন্ধন। এতে ক্যাব’র পক্ষ থেকে উপস্থিত থাকবেন ক্যাব’র সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ। সংগঠনটির অভিযোগ, মুরগির দাম বাড়িয়ে হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছেন ব্যবসায়ীরা। শুধু মুরগিই নয়, বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে যেসব অসাধু ব্যবসায়ী ফায়দা লুটছেন, তাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ক্যাব’র নেতারা।
ক্যাব’র সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া বলেন, ব্যবসায়ীরা কথা দিয়েছিলেন রোজায় কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। কিন্তু দেখা গেল, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগিতেই তারা ১০০ টাকার ওপরে লাভ করেছেন। এভাবে ভোক্তাদের পকেট থেকে হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এসব অসাধু ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় আরও অনেকে সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে।
ক্যাব’র সহ-সভাপতি নাজের হোসাইনের দাবি, বাজারে সারা বছর কোনো না কোনো পণ্য নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা অস্থিরতা তৈরি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নেন। তিনি বলেন, কখনো ব্রয়লার মুরগি, আবার কখনো চিনি কিংবা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়, এভাবে বছরজুড়ে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা চলছেই। তাতে মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন। এক মাসের একটু বেশি সময়ে ব্রয়লার মুরগির ব্যবসা করে এক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। তাহলে সারা বছর চিনি ও সয়াবিনের মতো পণ্যের মাধ্যমে কত হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে ভাবুন। ভোক্তারা অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে গেছে উল্লেখ করে নাজের হোসাইন বলেন, সাধারণ মানুষের কথা বলার জায়গা নেই। এজন্য ক্যাব’র পক্ষ থেকে মাঠে নামা হয়েছে। এদিকে বাজারে এত অব্যবস্থাপনার মধ্যেও কোনো ব্যবসায়ীকে তিরস্কার পর্যন্ত করা হয়নি। শুধু প্রতিযোগিতা কমিশনে কয়েকটি মামলা হয়েছে। কিন্তু সেসব মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। মামলাগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। প্রতিযোগিতা কমিশনকে এসব মামলার বিষয়ে স্পষ্ট করে বক্তব্য দেয়ার আহ্বান জানান নাজের হোসাইন।
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, একটি বেসরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে যে দেশের ৭১ শতাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ কম খেয়ে থাকছেন। এটাই সত্য। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্রয়লার মুরগিকাণ্ডের মাধ্যমে কিছু বিষয় আরও স্পষ্ট হয়েছে। রুহিন হোসেন বলেন, ব্রয়লার মুরগিকা- সামনে এনে অনেকে চিনির সিন্ডিকেটকে আড়াল করেছে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের আরও বড় লুটের খবর লুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। অনেক ব্যবসায়ী আবার নিজে লুটপাট অব্যাহত রেখে ব্রয়লার মুরগির দাম কমাতে বড় বড় কথা বলছেন। এদের সবার শাস্তি দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে রমজানে মানুষকে একটু স্বস্তি দিতে দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানার আহ্বান সিপিবি’র এই নেতার।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: