দুর্নীতির দায়ে ফেঁসে গেলেন পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অসীম কুমার গাঙ্গুলী
তিনি মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পরিবার কল্যাণ সহকারীদের মিনি স্টোরের জন্য ক্রয়কৃত স্টিলের ট্রাংক কেনায় দুর্নীতি করেছেন।

প্রথম নিউজ, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অসীম কুমার গাঙ্গুলীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অবশেষে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পরিবার কল্যাণ সহকারীদের মিনি স্টোরের জন্য ক্রয়কৃত স্টিলের ট্রাংক কেনায় দুর্নীতি করেছেন। তিনি স্টিলের ট্রাংক ক্রয়ে খন্দকার ফার্নিচার প্রতিষ্ঠানের নামে যে বিল ভাউচার জমা দিয়েছেন খোঁজ নিয়ে যানা যায়, এই ফার্নিচারের দোকানে কোনো স্টিলের জিনিস তৈরি করা হয় না। অসীম কুমার গাঙ্গুলী নিজের দুর্নীতি ধামা-চাপা দেয়ার জন্য অনেক সময় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে কিছু মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়ে তার ওপরের অফিসারদের বেকায়দায় ফেলতেন যাতে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো তদন্ত না করেন। অসীম কুমার গাঙ্গুলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু ও কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তকরণ দণ্ড প্রদান করা হবে না তার কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। গত ১১ই জানুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদলের প্রেরিত এক অভিযোগনামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। অভিযোগনামায় বলা হয়, আপনার উপযুক্ত কর্মকাণ্ড প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। আপনার কার্যকলাপ সরকারি কর্মচারী বিধিমালা-২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও ৩ (ঘ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ ও দুর্নীতির দায়ে দোষী হিসেবে গণ্য এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সেহেতু আপনার এহেন কার্যকলাপের জন্য আপনাকে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা মোতাবেক অভিযুক্ত করা হলো। সেখানে দশ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে তার কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝিনাইদহ জেলা ও সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কয়েকজন কর্মচারী ও কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অসীম কুমার গাঙ্গুলীর বিরুদ্ধে শুধু স্টিলের ট্রাংক কেনায় দুর্নীতি নয় তার বিরুদ্ধে আরও অনেক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, সে এই অফিসের বিভিন্ন জিনিস ক্রয়ের নামে ভুয়া বিল ভাউচার করে বছরের পর বছর ধরে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন যা সঠিকভাবে তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। অসীম কুমার গাঙ্গুলী স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী নেতাদের দিয়ে অফিস স্টাফদের বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি ও বদলির ভয় দেখাতো, যে কারণে তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পাই না। অসীম কুমার গাঙ্গুলী একা নয় তার সঙ্গে আরও দুই-তিন জন অফিস স্টাফ জড়িত আছে। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ এরা সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে লাগামহীনভাবে দুর্নীতি কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে অফিসের মহিলা স্টাফদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে অসীম কুমার গাঙ্গুলীকে একাধিকবার ফোন করলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: