প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা বাতিল দাবি বিশিষ্ট নাগরিকদের

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: শিক্ষাবর্ষের শেষপ্রান্তে এসে হঠাৎ করে প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণাকে হঠকারী সিদ্ধান্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা। তারা মনে করেন শতকরা ২০ ভাগ শিক্ষার্থীর জন্য এই সুযোগ ক্লাসের অন্যান্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনেও বিরূপ প্রভাব ফেলবে। একই সাথে সরকারে যেখানে পরীক্ষা পদ্ধতিই ক্রমান্বয়ে তুলে দেয়ার কথা বলছে সেখানে খুদে এই শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন ভালো ফল বয়ে আনবে না। তাই অবিলম্বে তারা প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা বাতিলেরও দাবি জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে দেশের ২৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক বলেন, বছরের শেষ সময়ে এসে আকস্মিকভাবে এমন সিদ্ধান্তে কোচিং বাণিজ্য ও গাইড বইয়ের দৌরাত্ম্য বাড়ারও আশঙ্কা তাদের। বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকরা এই দাবি জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, একসময় প্রচলিত ব্যবস্থায় মেধাবৃত্তি প্রদানের উপায় হিসেবে বাছাই করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হতো প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। ২০০৯ সালে সেটি বাদ দিয়ে শুরু হয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি)’ পরীক্ষা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ও নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা বিবেচনায় নিয়ে তিন বছর ধরে পিইসি পরীক্ষা হচ্ছে না।
আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে চালু হচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রম, এই শিক্ষাক্রমে প্রাথমিক পর্যায়ে পাবলিক পরীক্ষাকে কম গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ধারাবাহিক মূল্যায়নের ওপর অধিকতর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণীতেও নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ অবস্থায় বছরের একেবারে শেষ সময় আকস্মিকভাবেই পুরনো ব্যবস্থার মতো প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যার যৌক্তিকতা ও নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীর সাথে খাপ-খাওয়ানোর লক্ষ্যে বর্তমানে প্রচলিত সনাতন শিখনকালীন মূল্যায়নপদ্ধতি এবং পরীক্ষানির্ভর, সনদসর্বস্ব শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন সময় দেয়া বক্তব্য অনুপ্রাণিত করেছে। কিন্তু শুধু ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে একটি বৃত্তি পরীক্ষা চালুর ঘোষণা তাদেরকে হতাশ করেছে। শিক্ষা নিয়ে প্রায়ই এত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিভ্রান্ত করে থাকে, যা মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়।
জানা যায়, গত ২৮ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আকস্মিকভাবেই এ বছর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়; যদিও শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বছরের শেষে হঠাৎ প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া একদিকে শিক্ষার্থীদের জন্য যেমন ক্ষতিকর বিষয় হবে, তেমনি নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে ভবিষ্যৎ শিক্ষা সংস্কারের জন্যও নেতিবাচক হবে। তারা বলেন, ‘আমরা আশা করছি, নীতিনির্ধারকেরা আকস্মিকভাবে ঘোষিত এবং জাতীয়ভাবে পরিচালিত প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার মতো পাবলিক পরীক্ষার (ঐরময ঝঃধশব ঊীধস) পরিবর্তে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এর দিকনির্দেশনার আলোকে সব শিক্ষার্থীর জন্য উপজেলাভিত্তিক বাছাইয়ের মাধ্যমে মেধাবৃত্তি প্রদানের বিষয়টিকে বিবেচনা করবেন। এর মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাপনা বিকেন্দ্রীকরণের পথে এগিয়ে যাবে বলে আমরা মনে করি।
বিবৃতিদাতা বিশিষ্ট নাগরিকরা হলেন-অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, রামেন্দু মজুমদার, সুলতানা কামাল, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক এম এম আকাশ, রাশেদা কে চৌধুরী, অধ্যাপক মনজুর আহমেদ, ইলিয়াস কাঞ্চন, অধ্যাপক মাহফুজা খানম, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, কাজী ফারুক আহমেদ, আসিফ সালেহ, ফেরদৌসী মজুমদার, মামুনুর রশীদ, নজরুল ইসলাম খান, কাজী রফিকুল আলম, এজাজুল ইসলাম, মনসুর আহমেদ চৌধুরী, শাহীন আনাম, মোস্তাক রাজা চৌধুরী, এম. সাখাওয়াত হোসেন, সঞ্জিব দ্রং, করভি রাকসন্দ, মালেকা বেগম, খালেদ মাসুদ পাইলট, অধ্যাপক শফি আহমেদ ও অধ্যাপক এম তারিক আহসান।
ডলারের বেশি পায়নি। প্রায় প্রতি বছরই ফিফা পুরস্কারমূল্য বাড়িয়েছে। ১৯৮২ সালে যেখানে ফিফার মোট পুরস্কারমূল্য ছিল ২.২ মিলিয়ন ডলার বা ১৭.৯৭ কোটি টাকা, তাই ৩০ বছরে বেড়ে গিয়েছে কয়েকশো গুণ।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews