পুরস্কার ঘোষিত সেই শীর্ষ মাদক কারবারি আ.লীগের সভাপতি

পাঁচ বছর আগে যশোরের শীর্ষ ১৪ মাদক কারবারিকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল জেলা পুলিশ। সেই তালিকায় চার নম্বরের ছিলেন চৌগাছা উপজেলার বড়কাবিলপুর গ্রামের সোনাই মণ্ডলের ছেলে শফি মেম্বর। সেই শফি মেম্বর ওরফে শফিকুল ইসলাম গত ২৮ মে ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি মনোনীত হয়েছেন

পুরস্কার ঘোষিত সেই শীর্ষ মাদক কারবারি আ.লীগের সভাপতি
পুরস্কার ঘোষিত সেই শীর্ষ মাদক কারবারি আ.লীগের সভাপতি

প্রথম নিউজ, যশোর : পাঁচ বছর আগে যশোরের শীর্ষ ১৪ মাদক কারবারিকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল জেলা পুলিশ। সেই তালিকায় চার নম্বরের ছিলেন চৌগাছা উপজেলার বড়কাবিলপুর গ্রামের সোনাই মণ্ডলের ছেলে শফি মেম্বর। সেই শফি মেম্বর ওরফে শফিকুল ইসলাম গত ২৮ মে ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি মনোনীত হয়েছেন। ধরিয়ে দিয়ে পুলিশের পুরস্কার ঘোষিত ‘শীর্ষ মাদক কারবারি’কে আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনীত করায় সমালোচনার ঝড় বইছে। এদিকে সমালোচনার মুখে ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ স্থগিত করা হয়েছে বলে চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী তার নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ জানিয়েছেন, শফিকুল ইসলাম ওরফে শফি মেম্বরের বিরুদ্ধে মাদকসহ ১৬টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি বেশ কিছু মামলায় ওয়ারেন্টও হয়েছিল।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৪ মে যশোর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ১৪ শীর্ষ মাদক কারবারিকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেন। ওই তালিকার ৪ নম্বরে ছিলেন চৌগাছার বড় কাবিলপুর গ্রামের সোনাই মণ্ডলের ছেলে শফি মেম্বার ওরফে শফিকুল ইসলাম। তখন পুলিশের মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হলে শফি মেম্বর বিদেশ চলে যান। সম্প্রতি দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। গত ২৮ মে যশোরের চৌগাছার ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে শফিকুল ইসলাম শফি মেম্বরকে সভাপতি ও মাস্টার ফারুক হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে আট সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হাবিবুর রহমান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা জানান, শীর্ষ মাদক কারবারি শফিকুল ইসলাম ওরফে শফি মেম্বর পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি দেশে এসে শীর্ষ নেতাদের ম্যানেজ করে দলীয় পদ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন। এদিকে ধরিয়ে দিতে পুলিশের পুরস্কার ঘোষিত সেই শীর্ষ মাদক কারবারিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনীত করায় সমালোচনার ঝড় বইছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের তুলোধুনা করছেন নেট ব্যবহারকারীরা। এ বিষয়ে ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফি মেম্বর বলেন, মানুষের নামে মামলা থাকলে দলীয় পদে আসতে পারবে না, এমন কথা কোথাও লেখা নেই। দল যদি মনে করে পদে রাখবে না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা হয়েছে, প্রত্যেকটিই ষড়যন্ত্রমূলক। এইসব মামলার ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ইতোমধ্যে দুটিতে খালাস পেয়েছি। বর্তমানে ১৬টি মামলা আছে। আমি বিদেশে অবস্থানকালেও তিনটি মামলায় আসামি হয়েছি। আমি কখনো মাদকসহ আটক হয়নি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা ও পুলিশের লোকের সঙ্গে বিরোধ থাকায় আমাকে একের পর এক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ৫ বছর মেম্বর ছিলাম। জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করেছি। তখন অনেকের কাছে শত্রু হয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে সোমবার বিকালে চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তিনি বিকাল ৩টার দিকে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, জীবন বৃত্তান্তের তথ্য গোপন করায়, ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ঘোষিত সভাপতি পদ স্থগিত করা হলো।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom