পোশাক নিয়ে চীনে নতুন বিধিনিষেধ

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: নতুন একটি আইনের খসড়া বিতর্কের জন্ম দিয়েছে চীনে। খসড়া অনুযায়ী, চীনাদের ভাবাবেগে আঘাত করে এমন পোশাক পরলে জেল বা জরিমানা পর্যন্ত হতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী এবং আইন বিশেষজ্ঞরা আইনের অতিরিক্ত প্রয়োগ এড়াতে আরও স্পষ্টতার আহ্বান জানিয়েছেন। চীন সম্প্রতি তার জননিরাপত্তা আইনে প্রস্তাবিত পরিবর্তনের একটি অংশ প্রকাশ করেছে-কয়েক দশকের মধ্যে এটি প্রথম সংস্কার। পোশাক আইন জনসাধারণের মধ্যে প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে- অনেকে অনলাইনে এটিকে অতিরিক্ত এবং অযৌক্তিক বলে সমালোচনা করেছে।
বিতর্কিত ধারা অনুযায়ী, যারা চীনা জাতির চেতনাকে ক্ষুন্ন করে বা অনুভূতিতে আঘাত করে এমন পোশাক এবং প্রতীক পরতে বা অন্যদের পরতে বাধ্য করে তাদের ১৫ দিনের জন্য আটক করা হবে এবং ৫,০০০ ইউয়ান (৬৮০ ডলার) পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। যারা এমন নিবন্ধ বা বক্তৃতা তৈরি বা প্রচার করে তারাও একই শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে। প্রস্তাবিত আইনে স্থানীয় বীর ও শহীদদের নাম অবমাননা, সেইসাথে তাদের স্মৃতি মূর্তি ভাংচুর করলেও শাস্তির বিধান দেয়া আছে।
এদিকে সমাজমাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কিসে রাষ্ট্রের ভাবাবেগে আঘাত লাগছে, তা কে ঠিক করবে? কারও আবার প্রশ্ন, পশ্চিমের দেশের পোশাক স্যুট, টাই পরলেও কি শাস্তির মুখে পড়তে হবে? চাইনিজ ইউনিভার্সিটি অফ পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ল-এর আইনের অধ্যাপক ঝাও হং বলেছেন, আইনে স্বচ্ছতার অভাব ব্যক্তিগত অধিকার লঙ্ঘনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। তিনি একটি মামলার উল্লেখ করেছেন গত বছর চীনে শিরোনাম হয়েছিল। যেখানে সুঝো শহরে একজন কিমোনো-পরিহিত নারীকে আটক করা হয়েছিল। ক্র্যাকডাউনের আরও উদাহরণ রয়েছে। এই বছরের মার্চে, পুলিশ রাতের বাজারে জাপানি সামরিক ইউনিফর্মের মতো পোশাক পরিহিত এক নারীকে আটক করেছিল।
গত মাসের শুরুর দিকে, বেইজিংয়ে তাইওয়ানের গায়ক চ্যাং হুই-মেই-এর একটি কনসার্টে যারা রামধনু রঙের পোশাক পরেছিলেন তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ২০১২ সালে নেতৃত্বে আসার পর থেকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কীভাবে একজন 'আদর্শ চীনা নাগরিক' হতে হবে তার নতুন সংজ্ঞা তৈরি করেছেন, এই খসড়া আইন তারই উদাহরণ ।
সূত্র : বিবিসি