বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ চায় রিহ্যাব

‘ঘোষিত জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ সম্পর্কিত রিহ্যাবের প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল।

বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ চায় রিহ্যাব
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে রিহ্যাবের সংবাদ সম্মেলন

প্রথম নিউজ,ঢাকা: ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ‘হাউজিং লোন’ নামে ২০ হাজার কোটি টাকার রিফাইন্যান্সিং তহবিল গঠনসহ নির্মাণসামগ্রীর মূল্য কমানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ শনিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘ঘোষিত জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ সম্পর্কিত রিহ্যাবের প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল।

সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, আমাদের দাবিসমূহ সম্পৃক্ত করা হলে এই খাত সরকারের রাজস্ব আয়ে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে এবং সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ঝুঁকি মুক্ত হবে। কারণ নতুন সম্পদ সৃষ্টি প্রবৃদ্ধিকে সরাসরি ধনাত্মক করে। অন্যথায় এ খাতের সঙ্গে যুক্ত সব ব্যবসায়ী মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখি হবেন। সর্বোপরি দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরআগে আবাসন শিল্পের সব সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশে থেকেছেন, নির্দেশনা ও পরামর্শ দিয়েছেন। এই শিল্পের বর্তমান সংকটেও সঙ্গে থাকবেন এমনটাই প্রত্যাশা এই খাতের বিনিয়োগকারীদের।

শামসুল আলামিন বলেন, রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলাম স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখা। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় এসেছে। সরকার দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে রাজস্ব পেয়েছে। এই টাকা দেশে বিনিয়োগ না হলে তার গন্তব্য কোথায় তা আপনারা নিশ্চয়ই জানেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে ডলারের সংকট কেন তৈরি হয়েছে সেটাও আপনারা জানেন। গত বাজেট অনুমোদনের পর অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যার অভাবে বিনিয়োগ কম হয়েছে। স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত থাকলে অর্থনীতিতে একটা ভালো সুফল আসবে।

‘নানা কারণে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনীতি টালমাটাল। আগামীতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে আরও বড় ধাক্কা লাগতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। সেটির প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মানি ট্রাফিকিং রোধ করার চেষ্টা করছে। স্ব-স্ব দেশ বৈদেশিক মুদ্রা কীভাবে দেশের ভেতরে রাখা যায় তার ব্যবস্থা করছে। কাজেই আমরা এই অবস্থায় যদি অপ্রদর্শিত অর্থ পাচারের সুযোগ না রেখে মূল ধারার অর্থনীতিতে নিয়ে আসতে পারি তবে সরকারের রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং আসন্ন সঙ্কট মোকাকিলা করা সহজ হবে।’

রিহ্যাব সভাপতি বলেন, অর্থমন্ত্রী গত ১৫ জুন সরকারি অর্থনৈতিক ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে বলেছেন, ‘অপ্রদর্শিত অর্থ উৎপাদনের জন্য বিদ্যমান ব্যবস্থাটাই দায়ী’। হঠাৎ করে বা রাতারাতি সিস্টেম পরিবর্তন করা সম্ভব না। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে নিবন্ধন ব্যয় ১২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ থেকে ৩ শতাংশে নিয়ে এসে ধীরে ধীরে সিস্টেম পরিবর্তন করলে তবেই সঠিক মূল্যে রেজিস্ট্রেশন হবে এবং সার্বিক অর্থনীতিতে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ বলে গণ্য করা যাবে।

ঘোষিত বাজেটে পাচারকৃত টাকা দেশে আনার বিষয়ে আইন করা হয়েছে, এটি সাহসী পদক্ষেপ। কিন্তু দেশ থেকে যাতে টাকা পাচার না হয়, সেদিকেই আমাদের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। বিনা প্রশ্নে উত্তম বিনিয়োগের সুযোগ ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেটে নির্দেশিত নির্দেশনার আদলে এখন বাস্তব সম্মত ও সময় উপযোগী বলে মন্তব্য করেন শামসুল আলামিন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- রিহ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইন্তেখাবুল হামিদ, সহ-সভাপতি (প্রথম) কামাল মাহমুদ, সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম দুলাল, লায়ন শরীফ আলী খান, প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহেল রানা প্রমুখ।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom