রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত
আজ বুধবার দেশটির সংসদে আইনপ্রণেতাদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে তিনি একই সঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এবং ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশত্যাগের আগে তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে যান।

প্রথম নিউজ ডেস্ক: অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে। আজ বুধবার দেশটির সংসদে আইনপ্রণেতাদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে তিনি একই সঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এবং ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশত্যাগের আগে তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে যান।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনীত প্রার্থী বাছাইয়ে পার্লামেন্ট অধিবেশন বসে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই)। বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসার প্রেসিডেন্ট পদে লড়াই করার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তিনি সরে দাঁড়ান।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে বিক্রমাসিংহে ১৩৪টি ভোট পেয়েছেন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুল্লাস আলাহাপেরুমা পেয়েছেন ৮২ ভোট। মাত্র তিনটি ভোটে পেয়েছেন বামপন্থী পেরামুনা দলের নেতা অনুরা কুমারা দিসানায়াকা। দেশটির সংসদীয় নিয়ম অনুযায়ী কোন প্রার্থী এক-তৃতীয়াংশের বেশি ভোট অর্জন করলেই তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
গণনা শেষ হওয়ার পর পার্লামেন্টের মহাসচিব বলেন, ‘‘সংবিধানের অধীনে অষ্টম নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহে নির্বাচিত হয়েছেন। গণ আন্দোলনের মুখে দেশটির প্রেসিডেন্টের পদ থেকে গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করার পর দেখা দিয়েছিল রাজনৈতিক সংকট। এমতাবস্থায় সংবিধান অনুযায়ী দেশটির ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন ছয়বারের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
তবে বিক্রমাসিংহে নির্বাচিত হলে বিক্ষোভ আরও বাড়তে পরে বলে ধারণা করছিল বিশ্লেষকরা। অর্থনৈতিক সংকটে দেশটির দুরবস্থার জন্য দায়ী প্রেসিডেন্ট গোতাবায় রাজাপাকসেকে পালানোর সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছিল তার বিরুদ্ধে।
বিক্ষোভকারীরা বিক্রমাসিংহের কার্যালয় অবরুদ্ধ করেছিলেন। অগ্নি সংযোগ করা হয়েছিল তার ব্যক্তিগত বাসভবনেও।কলম্বোতে বিক্ষোভের আয়োজনকারী ডুমিন্ডা নাগামুওয়া বলেছিলেন, ‘‘রনিল ক্ষমতায় এলে আমাদের স্থিতিশীলতা থাকবে না। তিনি দেশের শত্রুদের রক্ষা করেছেন।’’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন বিক্রমাসিংহের নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে দেশটিতে বিক্ষোভ আরও বৃদ্ধি পাবে। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী বলেছেন, অভিজাত শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবেন তারা। গত শনিবার বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট প্যালেস থেকে পালিয়ে যান গোতাবায়া রাজাপাকসে। তারপরেই তিনি প্রথমে মালদ্বীপ এবং সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান। তার ভাই ও সাবেক অর্থমন্ত্রী বসিল রাজাপাকসেও দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগে গণবিক্ষোভের জের ধরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
গত মার্চ মাস থেকেই অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কায় শুরু হয় গণআন্দোলন। এক পর্যায়ে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও প্রেসিডেন্টের বাসভবনেও ঢুকে পড়েন তারা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। দেশটির পরিস্থিতি এখনও শান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews