সমন্বয়কদের দেখতে ডিবি কার্যালয়ে সোহেল তাজ, বের হয়ে যা বললেন

বিবেকের তাড়নায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের খোঁজ নিতে তিনি ডিবি কার্যালয়ে এসেছেন বলে জানান।

সমন্বয়কদের দেখতে ডিবি কার্যালয়ে সোহেল তাজ, বের হয়ে যা বললেন

প্রথম নিউজ, অনলাইন: গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে দেখতে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। তবে তাদের সাথে তিনি দেখা করতে পারেননি। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের ছাত্রছাত্রী ভাইবোনের বুকে যাতে আর একটাও গুলি না যায়। আপনারা বিরত থাকুন। এটা ঠিক নয়।’

সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করেন তিনি। পরে সেখান থেকে বের হয়ে সন্ধ্যায় ডিবি কার্যালয়ের গেটের সামনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

ডিবি প্রধানের কাছে তিনটি প্রশ্ন নিয়ে এসেছিলেন জানিয়ে সোহেল তাজ বলেন, ‘আমার প্রথম প্রশ্ন ছিল, এই সমন্বয়কারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে নাকি নিরাপদ হেফাজতে নেয়া হয়েছে? দ্বিতীয় প্রশ্ন, যদি গ্রেফতার হয়ে থাকে, তাহলে আমার কোনো দাবি নেই। কিন্তু যদি নিরাপদ হেফাজতে নেয়া হয়ে থাকে, তাহলে আমি তাদের সাথে দেখা করতে চাই। ডিবি প্রধান আমাকে পরবর্তী সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানিয়েছেন, এই ছয় সমন্বয়কারী যেহেতু তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন, সেই কারণে তাদের নিরাপদ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি তাকে প্রশ্ন করি ছয় সমন্বয়ক তাদের নিরাপত্তা নিয়ে কিভাবে উদ্বিগ্ন? তারা (সমন্বয়ক) কি আপনাদের জানিয়েছিলেন? ডিবি প্রধান জবাবে জানান, তারা মনিটরিং করে বুঝতে পেরেছেন সমন্বয়করা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’

সোহেল তাজ বলেন, ‘আমার তৃতীয় প্রশ্ন ছিল, সমন্বয়কদের কখন নিরাপদ হেফাজত থেকে মুক্তি দেয়া হবে? জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যখন তাকে নির্দেশনা দেবেন, তখনই তাদের ছেড়ে দেয়া হবে।’

চলমান পরিস্থিতির সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে সমূহ সমাধান প্রয়োজন। সমাধানের প্রথম কাজ যেটা করতে হবে, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্টভাবে স্বতন্ত্রভাবে তদন্ত করে বিচার করতে হবে। এগুলোর জন্য যারা দায়ী, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। বিচারবহির্ভূত কোনো হত্যাকাণ্ড করা যাবে না। এই সমাধান রাজনৈতিকভাবে করতে হবে। সমাধান সবাইকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে।’

সোহেল তাজ বলেন, ‘এই ছাত্র আন্দোলন ঘিরে যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা কিছুই নয়। ক্ষয়ক্ষতি কোনো বিষয় নয়। যে সম্পদ ধ্বংস হয়েছে, সেগুলো তো জনগণের করের টাকায় করা হয়েছে। এগুলো জনগণের সম্পদ। এগুলো হয়তো ভবিষ্যতে আবার গড়ে নেয়া যাবে। কিন্তু একটি প্রাণ যেটা আমরা হারিয়েছি, একটি প্রাণও কি আমরা ফেরত পাব? এই প্রাণ কি ফিরে আসবে? আমাদের মনে রাখতে হবে, মুখ্য জিনিসটা কী? প্রাণের মূল্য কিন্তু কোটি কোটি টাকার চেয়ে অনেক বেশি।’

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এই দেশ তোমাদের, আশা ছাড়া যাবে না। সবসময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে।’ বিবেকের তাড়নায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের খোঁজ নিতে তিনি ডিবি কার্যালয়ে এসেছেন বলে জানান।

ছয় সমন্বয়ককে ছাড়া হবে কিনা প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে ছাড়া হবে।’