পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চট্টগ্রাম
এই ঘটনায় দলটির ১৫-২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনকে আটক করা হয়।

প্রথম নিউজ, চট্টগ্রাম : বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ মিছিলের সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এই ঘটনায় দলটির ১৫-২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনকে আটক করা হয়। সংঘর্ষে ৫ পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছে। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কোতোয়ালি থানাধীন কাজীর দেউড়ি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আশেপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর নুর মোহাম্মদ সড়কের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে মহানগর বিএনপি। দলটির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকে। এ সময় সমাবেশস্থল সংলগ্ন কাজীর দেউড়ি মোড় দিয়ে যুবদলের একটি মিছিল আসার সময় পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। একপর্যায়ে নেতাকর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে সামনের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ সময় যুবদলের নেতাকর্মীরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। তাদের সঙ্গে আশেপাশে থাকা বিএনপি’র কিছু নেতাকর্মীও যোগ দেন।
এদিকে প্রথমদিকে পুলিশের সংখ্যা কম থাকলেও পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ আসলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পিছু হটে। সংঘর্ষের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ও নগর বিএনপি’র আহ্বায়ক ডা শাহাদাত হোসেন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়েই মিছিল না করে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। পরে আশপাশে অভিযান চালিয়ে দলটির ২০ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় নিজেদের ৫ সদস্যও আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। এ সময় ফুটপাথে থাকা একটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেয়া হয়।
নগর বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী বলেন, আমরা পার্টি অফিসের সামনে প্রোগ্রাম করছিলাম। এ সময় কাজীর দেউড়ি মোড় হয়ে একটি মিছিল প্রোগ্রামস্থলে আসার সময় পুলিশ বিনা উস্কানিতে হামলা করে। এতে যুবদলের এরশাদ হোসেন, বেলাল হামজা, বিশুসহ ১৫-২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অনেককে আটক করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশের আয়োজন করেছিলাম। বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আসতে থাকে। এ সময় পুলিশ হঠাৎ সমাবেশের প্রবেশস্থল কাজীর দেউড়ি মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে নেতাকর্মীদের আসতে বাধা দেয়। তবে যুবদলের একটি মিছিল ব্যারিকেড ভেঙে সমাবেশস্থলে আসতে চাইলে পুলিশ হামলা শুরু করে। এতে আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এক কর্মীর চোখে গুলিও লেগেছে।
তিনি বলেন, একদিকে তারা সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। অন্যদিকে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে নেতাকর্মীদের আসতে দেবে না। এটা কোন ধরনের দ্বিচারিতা। কয়েকজন অতিউৎসাহী পুলিশ সদস্যের কারণে আজকের এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
তবে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি’র নেতাকর্মীরা মিছিল থেকে পুলিশের উপর হামলা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ সময় তারা গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এই ঘটনায় ২০ জনকে আটক করা হয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: